দুই দশকের অভিনয়জীবন ফেরদৌস ও রিয়াজের। এই দুই দশকে চলচ্চিত্রের পাশাপাশি নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্রেও অভিনয় করছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই দুই নায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী প্রচারাভিযানে অংশ নিয়েছেন। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভা থেকে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়েছেন। দেশের জনগণ ও ভোটারদের উদ্দেশে এই দুই নায়ক বলেন, তাঁদের অভিনয় যদি ভালো লেগে থাকে, তাহলে যেন নৌকায় ভোট দেন।
৩০ ডিসেম্বর সারা দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। গতকাল বুধবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্বাচনী প্রচারাভিযানে ছিলেন ফেরদৌস আর রিয়াজ। তাঁরা দুজন ভোট চেয়ে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বক্তব্যও দিয়েছেন।
মঞ্চে দাঁড়িয়ে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, ‘আমার অভিনয় ভালো লাগলে এর বিনিময়ে নৌকায় ভোট দেবেন। দীর্ঘ অভিনয়জীবনে আমি যদি অভিনয়ের মাধ্যমে বিন্দুমাত্র আনন্দ দিয়ে থাকি, তবে ভোট দিয়ে আবার আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় আনবেন। আমার এই একটাই চাওয়া আপনারা পূরণ করবেন। টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার নাড়ি পোঁতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাড়ি পোঁতা। সেখানে আসতে পেরে, কথা বলতে পেরে, নিজেকে ধন্য মনে করছি। অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি। এবারের নির্বাচন আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। সেই নির্বাচনে সবাই মিলে নৌকায় ভোট দেবেন। আমরা ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ একসঙ্গে পালন করব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।’
রিয়াজের পর মঞ্চে বক্তৃতা দিতে আসেন ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচন আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার নির্বাচন। সেখানে আমাদের জয়ী হতেই হবে। আমার ২০ বছরের চলচ্চিত্র অভিনয়জীবন যদি বিন্দুমাত্র ভালোবেসে থাকেন, তবে নৌকায় ভোট দেবেন। তরুণ প্রজন্মের যারা প্রথম ভোট দেবে, তারা অবশ্যই যেন নৌকায় ভোট দেয়। ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের দেশকে আরও এগিয়ে নিতে চাই।’
ফেরদৌস ও রিয়াজ এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৩তম অধিবেশনে যোগ দেন। ছয় দিনের সেই সরকারি সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুব কাছ থেকে দেখা ও জানার সুযোগ হয়েছিল তাঁদের। দেশে ফিরে এসে মুগ্ধতার কথাও বলেছেন তাঁরা।
প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারাভিযানে আগামী দিনগুলোতেও থাকবেন বলে জানালেন ফেরদৌস। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে কবর জিয়ারত করে নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরু করি। এরপর জনসভার মঞ্চে নেত্রী আমাদের দুজনকে বক্তব্য দিতে বললেন। এটা অসাধারণ পাওয়া। নেত্রীর গাড়িবহরের সঙ্গে প্রত্যেকটা জায়গায় যাচ্ছি। সবকিছু খুব কাছ থেকে দেখছি। মনে হচ্ছে, দেশের জন্য কিছু একটা করছি। অন্য রকম অনুভূতি কাজ করছে। আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, আমাদের তরফ থেকে এটা মুক্তিযুদ্ধ। কারণ, এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় ভীষণভাবে দরকার। এটা অস্তিত্ব রক্ষার নির্বাচন, সে কারণেই সক্রিয়ভাবে নেমে পড়েছি। মনের ভেতর থেকে উপলব্ধি করে কাজ করছি। আগামী দিনগুলোয় প্রধানমন্ত্রীর যেসব নির্বাচনী প্রচারাভিযান হবেম সব কটিতে আমরা থাকব।’
নির্বাচনী প্রচারাভিযান শেষে আজ রাতে তাঁরা ঢাকায় ফিরবেন বলে জানালেন ফেরদৌস।