লিওনেল মেসি নয়তো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো- গত এক দশকে ঘুরেফিরে ব্যালন ডি’অর জিতেছেন দুজন। এ দুজনের রাজত্ব ভেঙে ২০১৮ সালের ব্যালন ডি’অর পুরস্কার জিতে নিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের ক্রোয়াট মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ।
প্যারিসে স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে মদ্রিচের হাতে ‘ফ্রান্স ফুটবল’ সাময়িকীর এ সম্মানজনক পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
এর আগে ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। পরে সাংবাদিকদের ভোটে রোনালদো ও আঁতোয়ান গ্রিজমানকে পেছনে ফেলে বর্ষসেরা ফুটবলারের এ পুরস্কার জিতলেন মদ্রিচ।
মেসি-রোনালদো ছাড়া সবশেষ কেউ ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন ২০০৭ সালে, বিজয়ী হয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা কাকা। ১০ বছর পর মেসি-রোনালদোর বাইরে আবার কেউ এ পুরস্কার জিতলেন।
মেসি-রোনালদোর দ্বৈরথ ভেঙে এ বছর ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও পেয়েছেন মদ্রিচ। তার আগে জিতেছেন উয়েফা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার। ক্রোয়াট তারকার ব্যালন ডি’অর জেতাটা তাই একরকম অনুমিতই ছিল।
গত মৌসুমে রিয়ালের টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল মদ্রিচের। এর পর রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়াকে প্রথমবারের মতো ফাইনালে তুলতেও বড় অবদান রাখেন তিনি। নিজে জেতেন বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার।
ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বড় চমক ছিল মেসির সেরা তিনে না থাকা। ফিফার বর্ষসেরাতেও সেরা তিনে ছিলেন না তিনি, ব্যালন ডি’অরেও একই পরিণতি। ১২ বছর পর সেরা তিন থেকে বাদ পড়লেন বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন তারকা। রোনালদো দ্বিতীয় ও গ্রিজমান হয়েছেন তৃতীয়, মেসি পঞ্চম।
ফিফার বর্ষসেরা ও ব্যালন ডি’অর পুরস্কার শুরুতে আলাদাভাবে দেওয়া হতো। ২০১০ সাল থেকে ফ্রান্স ফুটবল-এর ব্যালন ডি’অরের সঙ্গে মিলে একীভূত হয়ে সেটির নাম হয়ে যায় ফিফা ব্যালন ডি’অর। ছয় বছর একসঙ্গে পথচলার পর ২০১৬ সাল থেকে আবার আলাদা হয়ে যায় ফিফা আর ফ্রান্স ফুটবল।
এবারই প্রথমবারের মতো দেওয়া হয়েছে নারী ফুটবলের ব্যালন ডি’অর। যেটি জিতেছেন অলিম্পিক লিঁওর নরওয়ের স্ট্রাইকার এডা হেগেরবার্গ। আর অনূর্ধ্ব-২১ বছরের নিচে খেলোয়াড়দের জন্য প্রথমবারের মতো চালু করা কোপা ট্রফি জিতেছেন পিএসজির ফরাসি ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে।
সেরা ৩০ :
প্রথম : লুকা মদ্রিচ (রিয়াল মাদ্রিদ, ক্রোয়েশিয়া)
দ্বিতীয় : ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো (রিয়াল মাদ্রিদ/জুভেন্টাস, পর্তুগাল)
তৃতীয় : আঁতোয়ান গ্রিজমান (আতলেতিকো মাদ্রিদ, ক্রোয়েশিয়া)
চতুর্থ : কিলিয়ান এমবাপে (পিএসজি, ফ্রান্স)
পঞ্চম : লিওনেল মেসি (বার্সেলোনা, আর্জেন্টিনা)
ষষ্ঠ : মোহামেদ সালাহ (লিভারপুল, মিসর)
সপ্তম : রাফায়েল ভারানে (রিয়াল মাদ্রিদ, ফ্রান্স)
অষ্টম : এডেন হ্যাজাড (চেলসি, বেলজিয়াম)
নবম : কেভিন ডি ব্রুইনে (ম্যানচেস্টার সিটি, বেলজিয়াম)
দশম : হ্যারি কেইন (টটেনহ্যাম হটম্পার, ইংল্যান্ড)
একাদশ : এনগোলো কঁতে (চেলসি, ফ্রান্স)
দ্বাদশ : নেইমার (পিএসজি, ব্রাজিল)
ত্রয়োদশ : লুইস সুয়ারেস (বার্সেলোনা, উরুগুয়ে)
চতুর্দশ : থিবো কোর্তোয়া (চেলসি/ রিয়াল মাদ্রিদ, বেলজিয়াম)
পঞ্চদশ : পল পগবা (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ফ্রান্স)
ষোড়শ : সার্জিও আগুয়েরো (ম্যানচেস্টার সিটি, আর্জেন্টিনা)
যৌথভাবে সপ্তদশ : করিম বেনজেমা (রিয়াল মাদ্রিদ, ফ্রান্স), গ্যারেথ বেল (রিয়াল মাদ্রিদ, ওয়েলস)
যৌথভাবে উনবিংশ : রবের্তো ফিরমিনো (লিভারপুল, ব্রাজিল), ইভান রাকিতিচ (বার্সেলোনা, ক্রোয়েশিয়া) ও সার্জিও রামোস (রিয়াল মাদ্রিদ, স্পেন)
যৌথভাবে ২২তম : এডিনসন কাভানি (পিএসজি, উরুগুয়ে), সাদিও মানে (লিভারপুল, সেনেগাল) ও মার্সেলো (রিয়াল মাদ্রিদ, ব্রাজিল)
যৌথভাবে ২৫তম : আলিসন (রোমা/লিভারপুল, ব্রাজিল), মারিও মানজুকিচ (ইউভেন্তুস, ক্রোয়েশিয়া) ও ইয়ান ওবলাক (আতলেতিকো মাদ্রিদ, স্লোভেনিয়া)
২৮তম : দিয়েগো গদিন (আতলেতিকো মাদ্রিদ, উরুগুয়ে)
যৌথভাবে ২৯তম : ইসকো (রিয়াল মাদ্রিদ, স্পেন) ও উগো লরিস (টটেনহ্যাম হটস্পার, ফ্রান্স)