পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে কিনা সে সন্দেহে আর দেরি না করে জুলাইয়ের মধ্যে অর্থায়নের উৎস চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
রোববার সচিবালয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় তিনি বলেন, “দুর্নীতির সন্দেহে পদ্মা সেতুর কাজে এক থেকে দেড় বছর দেরি হয়ে গেছে। দুর্নীতির এ রকম একটা অদ্ভুত সন্দেহে কাজ বন্ধ করে রাখতে পারি না আমরা।”
আগামী জুলাইয়ের মধ্যে পদ্মা সেতুর অর্থায়নের উৎসের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, দাতারা আমাদের সঙ্গে থাকবে। মালয়েশিয়ার অফার এখনও পাইনি। যেটা হাতে আছে সেটা পারসু করা উচিৎ। না হলে অন্য কিছু দেখব।”
এ সরকারের মেয়াদেই পদ্মা সেতুর কাজ শুরুর জন্য গত মাসে মালয়েশিয়ার সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করে সরকার। চলতি মাসের শেষ দিকে মালয়শিয়া এ নিয়ে চুক্তির প্রস্তাব দিতে পারে বলে এর আগে জানিয়েছেন যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
২৯০ কোটি ডলারের পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ১২০ কোটি ডলার দেওয়ার জন্য চুক্তি করলেও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত বছর তা স্থগিত করে দেয়। ফলে এ প্রকল্পের জন্য চুক্তিবদ্ধ অন্য দাতা সংস্থাগুলোর অর্থায়নও আটকে যায়।
এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, “গত এপ্রিলে বিশ্বব্যাংক আমাদের যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হতে পারার সম্ভাবনার কথা বলেছে। তবে এখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি।”
“পদ্মা সেতু প্রকল্পে এখন পর্যন্ত পুনর্বাসনের যে কাজ হয়েছে তার সবটাই আমাদের টাকায়। বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের ভিত্তিতে অক্টোবরে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করে কিছু পাইনি। এরপর তারাও এ বিষয়ে কিছু বলেনি”, যোগ করেন তিনি।
পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমার মনে হয় যেটা আছে, (বিশ্ব ব্যাংকসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার) সেটা হলেই ভাল।”
পদ্মা সেতু ছাড়াও মূল্যস্ফীতি, ভর্তুকি, খাদ্য মজুদ, ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেওয়া এবং কালো টাকা নিয়েও কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
আলোচনার শুরুতেই আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আগামী অর্থবছর মূল্যস্ফীতিকে সাড়ে ৭ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যে রাখতে হবে। ভর্তুকিও কিছুটা সমন্বয় করতে হবে।
মূল্যস্ফীতি কীভাবে কমবে- এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি এবং ব্যাংক ঋণ কমানোর মতো পদক্ষেপ সুফল দিতে পারে।
আগামী বাজেট সরকারের নির্বাচনী বাজেট হবে কী না জানতে চাইলে মুহিত বলেন, “এটা নির্বাচনী বাজেট না, জনস্বার্থের বাজেট হবে।”
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটা নিয়ে আলোচনা চলছে। এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।”
ফিনানশিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খোন্দকার মুনীরুজ্জামান, চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকের স্যোশাল অ্যাফেয়ার্স এডিটর বেবি মওদুদ, প্রবীণ সাংবাদিক রাহাত খান এই বাজেট আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন।