সেপ্টেম্বরে ন্যু ক্যাম্পে পিএসভি আইন্দহোফেনকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে চলতি মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ শুরু করেছিল বার্সেলোনা। যেখানে লিওনেল মেসি করেছিলেন হ্যাটট্রিক। ফিরতি লেগে নিজেদের মাঠেও মেসির কাছেই হেরে গেল পিএসভি। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড গোল করলেন, করালেন, এবং নিশ্চিত করলেন দলের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাও। মেসিময় রাতে পিএসভিকে ২-১ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা।
শেষ ষোলোর টিকিট নিশ্চিত হয়েছিল আগের ম্যাচেই। জিতলে নিশ্চিত হবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাও- এমন সমীকরণ নিয়ে বুধবার রাতে পিএসভির মাঠে খেলতে নেমেছিল বার্সেলোনা। লা লিগায় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলা ম্যাচ থেকে শুরুর একাদশে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছিলেন বার্সা কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে। চোট কাটিয়ে ফেরেন ইভান রাকিটিচ ও ফিলিপে কুতিনহো। অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে বদলি হিসেবে নেমে গোল করা উসমান ডেম্বেলেও ফেরেন শুরুর একাদশে।
নিজেদের মাঠে বার্সাকে অবশ্য ম্যাচের শুরু থেকেই চেপে ধরেছিল পিএসভি। ১৬ মিনিটের মধ্যেই অন্তত দুই গোলে এগিয়ে যেতে পারত তারা। কিন্তু চতুর্থ মিনিটে পিএসভির পেরেইরোর ফ্রি-কিক ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান বার্সার গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন। ১৬ মিনিটে ২০ গজ দূর থেকে আবার পেরেইরোর জোরালো শট, এবার বল ফেরে পোস্টে লেগে। ২৪ মিনিটে ডি ইয়ং সুযোগ নষ্ট করলে আরেকবার হতাশ হতে হয় স্বাগতিক সমর্থকদের।
৩৫ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত বার্সা। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান প্লে-মেকার কুতিনহোর শট ফেরে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে। পরের মিনিটে সুযোগ আসে আবারো। এবার আর্তুরো ভিদালের দুটি শট লাইন থেকে ফিরিয়ে দেন ফিলিপ রোসারিও। বিরতির আগে আরেকবার ভাগ্যের জোরে বেঁচে যায় বার্সা। ডি ইয়ংয়ের হেড ফেরে ক্রসবারে লেগে। ফলে গোলশূন্য স্কোরলাইনেই শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে ধার বাড়াতে থাকে বার্সা। ৬১ মিনিটে আসে সাফল্য। দলকে এগিয়ে নেন মেসি। ডেম্বেলের সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে মেসির দারুণ বাঁকানো শট পিএসভির চার ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে আশ্রয় খুঁজে নেয় জালে। এই গোলে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে (১০৫, রিয়াল মাদ্রিদ) পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে একক কোনো ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটা নিজের করে নিলেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা (১০৬, বার্সেলোনা)।
৭০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলে বার্সা। মেসি এবার গোলের জোগানদাতা। মেসির দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে পা ছুঁয়ে বল জালে জড়ান বার্সার ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে। দুই গোলের মাঝের সময়ে রাকিটিচ ও ডেম্বেলে সুযোগ হাতছাড়া না করলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ফেরার চেষ্টা করে পিএসভি। ৮২ মিনিটে ডি ইয়ংয়ের গোলে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিতও দেয় তারা। কিন্ত বাকি সময়ে আর কোনো গোল না পাওয়ায় ঠিকই পরাজয় বরণ করে নিতে হয় তাদের।
৫ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে আছে বার্সেলোনা। ৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে টটেনহাম। সমান পয়েন্ট নিয়ে মুখোমুখি লড়াইয়ে পিছিয়ে তিনে আছে ইন্টার মিলান। ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে পিএসভি।