মেয়র হানিফের দ্বাদশ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

মেয়র হানিফের দ্বাদশ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফের দ্বাদশ মৃত্যুবাষির্কী আজ বুধবার (২৮ নভেম্বর)। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ ও স্নেহভাজন এই নেতার মৃত্যুবার্ষিকীতে শোক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী।

তার একমাত্র পুত্র ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন পিতার মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনায় দেশবাসীর নিকট দোয়া চেয়েছেন।

এদিকে, সাবেক মেয়রের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন সমূহ, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ স্মৃতি সংসদ।

কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে- সকাল ১০:৩০ মিনিটে আজিমপুর কবরস্থানে কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিল, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, দুপুর ১২ টায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নগর ভবনে স্বরণ সভা ও দোয়া মাহফিলসহ ২ সপ্তাহব্যাপী মেয়র হানিফ স্বাস্থ্য সেবা পক্ষ (বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান) প্রভৃতি।

এছাড়া, বিকাল ৪টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজন করেছে স্বরণ সভা ও দোয়া মাহফিল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী লীগসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৪ সালের ১ এপ্রিল ঢাকার সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন মোহাম্মদ হানিফ। ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর রাতে ৬২ বছর বয়সে ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

মোহাম্মদ হানিফ ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে রাজনীতি শুরু করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৫ সালে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পান। এসময় ছয়দফা মুক্তি সনদ প্রণয়ন ও প্রচারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। তিনি ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া ঢাকা ১২ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। ’৭৬ সালে তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৬ এর মার্চের শেষ সপ্তাহে স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনে মোহাম্মদ হানিফ তার বলিষ্ট ও গতিশীল নেতৃত্বে ‘জনতার মঞ্চ’ তৈরী করেন, যা তৎকালীন বিএনপি সরকারের পতনসহ আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য টার্নিং পয়েন্ট তৈরি করে এবং যার ফলশ্রুতিতে ’৯৬-এর ১২জুন দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্ঠি হয় এবং মোহাম্মদ হানিফের প্রাণপ্রিয় সংগঠন আওয়ামী লীগের নিরংকুশ বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশের ট্রাকে শেখ হাসিনার ওপর নারকীয় গ্রেনেড হামলার সময় নিজের জীবন তুচ্ছ করে মানবঢাল রচনা করে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে রক্ষা করেন মোহাম্মদ হানিফ। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রাণে রক্ষা পেলেও স্প্লিন্টারের আঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হন তিনি। মস্তিস্কসহ দেহের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য স্প্লিন্টার ঢুকে পড়ে। ২০০৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী মুক্তাঙ্গণে এক সমাবেশে বক্তৃতা দেয়ার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন মেয়র হানিফ। মাথায় বিদ্ধ স্প্লিন্টারের প্রতিক্রিয়া পরবর্তী সময়ে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ও অকাল মৃত্যুর কারণ হিসেবে কাজ করে।

বাংলাদেশ