প্রথমবারের মতো তরুণদের সঙ্গে দেশ ভাবনা নিয়ে সরাসরি কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে নতুন প্রজন্ম ও বাংলাদেশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও তাঁর ভবিষ্যৎ ভাবনার কথা জানাবেন।
১৬ নভেম্বর গণভবনে অনুষ্ঠেয় ‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’ সরাসরি কথা বলবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে এর আয়োজন করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)।
এটি বাংলাদেশের প্রথম কোনো অনুষ্ঠান যেখানে সরাসরি তরুণদের মুখোমুখি হবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ অনুষ্ঠানে সরাসরি তরুণদের বিভিন্ন মতামত গ্রহণের পাশাপাশি তাদের প্রশ্নের উত্তর দেবেন বলেও জানা গেছে।
মূলত সম্প্রতি দেশের ২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক হাজার ৮৬ শিক্ষার্থীর ওপর চালানো ‘কল রেডি’ নামের একটি সংগঠনের এক জরিপে উঠে আসে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সন্তুষ্ট দেশের ৬৮.৩ শতাংশ শিক্ষিত তরুণ ভোটার। তাদের ৫১.৩ শতাংশ চায় বর্তমান সরকার আবার ক্ষমতায় আসুক। এছাড়া ৫৩.৫ শতাংশ তরুণ মনে করে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।
আর, নির্বাচনের আগে এমন আয়োজনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তরুণরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই তাদের পোস্টে প্রধানমন্ত্রী ও সিআরআইকে ধন্যবাদ জানান। মূলত নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে ‘লেটস টক’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তারা।
আয়োজক প্রতিষ্ঠান সিআরআই সূত্র জানিয়েছে, ‘লেটস টক’ অনুষ্ঠানে উঠে আসবে তরুণদের স্বপ্নের কথা, স্বপ্ন পূরণের কথা এবং স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার কথা। তারুণ্য ও বাংলাদেশ নিয়ে ভবিষ্যৎ ভাবনার কথা জানাবেন প্রধানমন্ত্রীও।
বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি করে সিআরআই বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের তরুণদের কাছে সবচে জনপ্রিয় নেতৃত্ব আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর কেন তরুণদের কাছে তাঁর জনপ্রিয়তা, সেটি আরো একবার প্রমাণ করতে ‘লেটস টক’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হচ্ছেন তিনি।
সারাদেশ থেকে বাছাই করা ১৫০ জন অংশগ্রহণকারী তরুণের সাথে দেশের বিভিন্ন নীতি নির্ধারণী বিষয়ে আলোচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন পেশাজীবী, চাকরিজীবী, উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত এবং দেশ গঠনে উদ্যমী তরুণ প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবে এই আয়োজনে।”
তরুণদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের নেয়া বিভিন্ন নীতি নির্ধারণ, ভবিষ্যতে উন্নত এক বাংলাদেশ গড়ায় বিভিন্ন পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা এবং সার্বিকভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারকের সাথে সরাসরি আলোচনার সুযোগ পাবেন এই তরুণেরা, বলছে আয়োজক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে সিআরআই-এর সিনিয়র বিশ্লেষক ও সমন্বয়ক ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ বলেন, ‘তরুণরা যাতে দেশের নীতি নির্ধারকদের সাথে খোলামেলাভাবে আলোচনা করতে পারেন এবং নিজেদের ভাবনা ও সমস্যাগুলোর কথা নীতি নির্ধারকদের কাছে পৌঁছাতে পারেন সে জন্য সিআরআই নিয়মিত আয়োজন করে আসছে লেটস টক।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদকে নিয়ে এর আগে বেশ কয়েকবার লেটস টক আয়োজন করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আয়োজন করা হচ্ছে ‘লেটস টক’। তরুণদের জন্য এটি ভিন্নমাত্রার এক আয়োজন।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘তরুণদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তিনি বর্তমানকে উৎসর্গ করেছেন।’ সুতরাং বোঝাই যায় তরুণদের জন্য কতটা আন্তরিক তিনি। আর সে কারণেই সিআরআই-এর এই আয়োজনকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি, যোগ করেন ব্যারিস্টার ফরহাদ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় চেষ্টা করেছেন সাধারণ মানুষের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে। আর সে কারণেই সাধারণ মানুষের লেখা চিঠি পড়েন তিনি। শুধু তাই নয়, এসব চিঠির উত্তরও দিয়ে আসছেন তিনি। তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন সময় প্রশ্ন করা হলে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা নিয়ে বারবার গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সরাসরি তরুণদের সাথে কথা বলার জন্য ১৬ নভেম্বর বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’ আয়োজন করা হবে গণভবনে। সময় টেলিভিশনসহ বেশ কিছু টেলিভিশন চ্যানেলে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার হবে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি CRI, Young Bangla সহ অন্যান্য অনলাইন পত্রিকার ফেসবুক পেজেও অনুষ্ঠানটির লাইভ দেখা যাবে।