সরকার সহযোগিতা করছে না: সংসদীয় কমিটিতে বিমান

সরকার সহযোগিতা করছে না: সংসদীয় কমিটিতে বিমান

গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জরুরিভিত্তিতে ৫শ’ কোটি টাকার চাওয়ার পরেই সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেড।

বিমানের ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনার অন্তরায় হিসেবে সরকারের অসহযোগিতাকেও চিহ্নিত করেছে তারা।

তাদের অভিযোগ সরকারের বিভিন্ন কাজে বিমান সহযোগিতা অব্যাহত রাখলেও ২০০৭ সালে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হওয়ার পর থেকে সরকার তরফ থেকে বিমানকে কোনো প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে না।

রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৩২তম বৈঠকের কার্যপত্রে এ অভিযোগ করেছে বিমান। কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর, শেখ মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ও ফরিদুন্নাহার লাইলী বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সংস্থাগুলোর বাজেট বরাদ্দ ও প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়।

ওই বৈঠকে বিমান কর্তৃপক্ষ দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতীতে বাংলাদেশ বিমানকে জাতীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইনস হিসেবে সরকার নানাভাবে সহযোগিতা করতো। কিন্তু ২০০৭ সালে বিমান পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হওয়ার পর থেকে সরকার কোনো প্রকার সহযোগিতা করছে না।

বিমান আরো বলেছে, অতীতে বিমানকে জ্বালানি তেলের জন্য কোনো প্রকার মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) দেওয়া লাগতো না। কিন্তু বর্তমানে বিমানকে কোটি কোটি টাকা জ্বালানি বাবদ ভ্যাট দিতে হচ্ছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ২০১০-১১ অর্থবছরে জ্বালানির ব্যয় বাবদ বিমানের প্রায় ৩৫ কোটি টাকা বেশি খরচ হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ নাসির উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়, তিনি একটি বৈঠকে রয়েছেন।

ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বিমান জাতীয় এয়ারলাইনস হিসেবে সরকারের যাবতীয় কল্যাণমূলক কাজে সহযোগিতা করছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বিদেশে অবস্থানরত কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু হলে বিমান বিনা ভাড়ায় মৃতদেহ পরিবহন করে থাকে। যা সামাজিক দায়বদ্ধতার একটি নজির বিহীন দৃষ্টান্ত।

ওই প্রতিবেদনে বিমান ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়নে পাঁচটি সুপারিশ করেছে। এগুলো হলো-জ্বালানি তেলের ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহর করা। সরকারি কর্মকর্ত/কর্মচারিদের বিমানে ভ্রমণ বাধ্যতামুলক করা। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সকল ল্যান্ডি চার্জ ও পার্কি চার্জ থেকে বিমানকে অব্যাহতি দেওয়া। রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংকের সকল ঋণের বিগরীতে সুদ মওকুফ করা। সরকারি ‘ইক্যুয়িটি’ বৃদ্ধি করা।

উল্লেখ্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করছে বিমান তার কাজের জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে কোনো প্রকার জবাবদিহিতা করে না।

প্রসঙ্গত বিমানের পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম সদস্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ তারেকের মাধ্যমে গত ২০ এপ্রিল বিমান এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চায়।

এদিকে অনুমিত হিসাব কমিটির আগামী বৈঠকে বিমানের যাবতীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ।

অর্থ বাণিজ্য