অর্থ কেলেঙ্কারিতে সুরঞ্জিতের সংশ্লিষ্টতা পায়নি কমিটি

অর্থ কেলেঙ্কারিতে সুরঞ্জিতের সংশ্লিষ্টতা পায়নি কমিটি

রেলওয়ের অর্থ কেলেঙ্কারিতে পদত্যাগী রেলমন্ত্রী  সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি এ ব্যাপারে গঠিত রেলওয়ের তদন্ত কমিটি।

রোববার বিকেলে তদন্ত প্রতিবেদন রেল মণ্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে। তার আগে দুপুরে রেলভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তদন্ত কমিটির প্রধান রেলওয়ের মহাপরিচালক আবু তাহের।

ঘটনার রাতে সুরঞ্জিতের ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) ওমর ফারুক তালুকদারকে বহনকারী গাড়িটি মন্ত্রীর বাড়িতে যাচ্ছিল কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে আবু তাহের জানান, ‘গাড়িটি মন্ত্রীর বাড়িতে যাচ্ছিল কিনা, সেটি বড় বিষয় নয়। মন্ত্রী গাড়িটির গন্তব্য সম্পর্কে জানতেন না, এটিই বড় কথা। তবে ওই গাড়িতে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা ও রেলওয়ে পুলিশের (জিআরপি) ঢাকা বিভাগীয় কমান্ড্যান্ট এনামুল হকের থাকাটাকে অস্বাভাবিক মনে হয়েছে তদন্ত কমিটির কাছে।’

তিনি জানান, তদন্তে জানা গেছে, গাড়িতে থাকা ৭০ লাখ টাকা রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুকের। তিনি ঘটনার পর সে টাকা ব্যাংকে জমা দেন। ওই টাকা যে ইউসুফ আলী মৃধা বা এনামুল হকের নয়, সেটিও নিশ্চিত হয়েছে কমিটি। বিষয়টি তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

৭০ লাখ টাকার উৎস কি সে সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কমিটির প্রধান জানান, ‘টাকার উৎস সম্পর্কে তদন্ত করার দায়িত্ব আমাদের নয়, এ বিষয়ে তদন্ত করবে দুদক।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক আরো জানান, ‘ঘটনা তদন্তে আমরা তিনবার বিজিবির সদর দফতর পিলখানায় গিয়েছি। ৫ জন বিজিবি সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।’

মন্ত্রণালয় প্রথমে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে এ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় বেধে দেয়। পরে কাজের সুবিধার্থে আরো ৫ কার্যদিবস সময় চায় তদন্ত কমিটি। রোববার নির্ধারিত ২০ কার্যদিবসের শেষ দিন বলে উল্লেখ করে তদন্ত কমিটির প্রধান আবু তাহের জানান, রোববার বিকেলে নির্ধারিত দিনেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এপিএস ওমর ফারুকের গাড়ির ড্রাইভার আলী আজম এখনো নিখোঁজ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই তদন্ত কতোটুকু সম্পন্ন হবে, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ড্রাইভার আজমকে তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হতে দু’বার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি আসেননি। তবে তার বক্তব্য ছাড়া তদন্ত অসম্পূর্ণ হবে না, তদন্তে কোনো প্রভাব পড়বে না।

গত ৯ এপ্রিল সোমবার রাতে মন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক তালুকদারের গাড়িতে অর্থ পাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই সময় গাড়িতে ইউসুফ মৃধা ও এনামুল হকও ছিলেন। রেলওয়েতে নিয়োগ বাবদ পাওয়া ঘুষের ৭০ লাখ টাকাসহ তারা পিলখানা বিজিবি সদর দফতরের প্রধান ফটকে আটক হন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় নিজের দায়-দায়িত্ব না থাকলেও তদন্তের স্বচ্ছতার কথা উল্লেখ করে ১৬ এপ্রিল রেলমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি নেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তবে তিনি ঘটনার পরপরই তদন্ত কমিটি গঠন করে ওমর ফারুক তালুকদারকে চাকরিচ্যুত ও ইউসুফ আলী মৃধাকে সাময়িক বরখাস্ত করে যান।

সুরঞ্জিত বর্তমানে সরকারের দফতরবিহীন মন্ত্রী।

রাজনীতি