বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, তারেকের যাবজ্জীবন

বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, তারেকের যাবজ্জীবন

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় করা হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেয়া হয়েছে।

বুধবার (১০ অক্টোবর) সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে অবস্থিত ঢাকার ১নং অস্থায়ী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন।

এদিন সকালে কারাগার থেকে ৩১ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আলোচিত এ মামলায় ৫১১ সাক্ষীর মধ্যে ২২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া আরও ২০ জনের সাফাই সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী।

ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে থানা পুলিশ। পরে তদন্তের দায়িত্ব পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরবর্তীতে মামলাটি যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি)।

২০০৮ সালের ১১ জুন মুফতি হান্নানসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন সিআইডির জ্যেষ্ঠ এএসপি ফজলুল কবির। ২০০৯ সালের ৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আখন্দ।

তিনি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তারেক রহমানসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৫২ জনের নামে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি অভিযোগপত্র দেন। জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও জেএমবি সদস্য শহিদুল আলম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেয়া হয়।

ফলে এ মামলায় এখন আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯ জন। এর মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জন পলাতক রয়েছেন। বাকি আসামিদের মধ্যে কারাগারে রয়েছেন ৩১ জন।

কারাগারে থাকা ৩১ আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, সামরিক গোয়েন্দা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক আবদুর রহিম, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. আশরাফুল হুদা, পুলিশ কর্মকর্তা শহুদুল হক, খোদা বক্স চৌধুরী, বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, আব্দুর রশীদ, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম আরিফ, জঙ্গি সংগঠন হুজির সদস্য আবু বক্কর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, শাহদাত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা শেখ আব্দুস সালাম, আব্দুল মাজেদ ভাট ওরফে ইউসুফ ভাট, আব্দুল মালেক ওরফে গোলাম মোহাম্মদ, মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু হোমাইরা ওরফে পীর সাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমেদ ওরফে আব্দুল হান্নান সাব্বির, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মহিবুল্লাহ ওরফে মহিজুর রহমান ওরফে অভি, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ড. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন ওরফে খাজা ওরফে আবু জানদাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া।

পলাতক ১৮ আসামি হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদ, হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. হানিফ, ডিএমপির সাবেক ডিসি (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান, ডিএমপির সাবেক ডিসি (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, হুজি সদস্য মাওলানা তাজউদ্দিন, মহিবুল মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন, খলিল, জাহাঙ্গীর আলম বদর, ইকবাল, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন ওরফে দোলোয়ার হোসেন ওরফে জুবায়ের, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও রাতুল আহম্মদ বাবু।

আইন আদালত