নর্থ-সাউথের ট্রাস্টি চেয়ারম্যানের দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে ইউজিসি

নর্থ-সাউথের ট্রাস্টি চেয়ারম্যানের দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে ইউজিসি

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্য, মহিলা শিক্ষক কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত, লাগামহীন দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক-কর্মকর্তা, ছাত্র, কর্মচারীদের দেওয়া তথ্য-প্রমাণ এবং গোপন সূত্রের দেওয়া তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ২৭১ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন গত বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। শিক্ষাসচিব তদন্ত প্রতিবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় পাঠিয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।

প্রতিবেদনের শেষে ১০টি সুপারিশে বলা হয়েছে, ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে ড. নাশিদ কামালের তোলা শ্লীলতাহানির অভিযোগের প্রত্যক্ষ প্রমাণের অভাবে সুপারিশ করা না গেলেও অভিযোগটি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ তার কাছে কয়েকজন মহিলা শিক্ষিকা ও স্টাফ লাঞ্ছিত হয়েছেন এবং অনেকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন এমন সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এ ছাড়াও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়েছেন। বলা হয়েছে, ইউনিভার্সিটির ট্রাস্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী গঠিত হয়নি। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির উপাচার্য ড. হাফিজ জি এ সিদ্দিকীর ৪ দিনের ছুটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বপ্রণোদিত হয়ে ট্রাস্টিবোর্ড চেয়ারম্যান ২ মাসের ছুটি প্রদান করে। এমন সিদ্ধান্ত চ্যান্সেলর তথা রাষ্ট্রপতির আদেশ অমান্য করা হয়েছে ।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. আতফুল হাই শিবলী এবং চার সদস্য প্রফেসর ড. আবুল হাশেম, মো. শামছুল আলম, মো. মিজানুর রহমান, ড. দুর্গা রানী সরকার স্বাক্ষরিত তদন্ত প্রতিবেদনে ৬ মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির ফাউন্ডার মেম্বারদের সমন্বয়ে ১৮৮২ সালের ট্রাস্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ট্রাস্ট গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। এই ট্রাস্টই বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তা ছাড়া ট্রাস্টের সঙ্গে নর্থ সাউথ ফাউন্ডেশনের কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির সাধারণ তহবিল থেকে ট্রাস্টিবোর্ড চেয়ারম্যান যে টাকা সরিয়ে নর্থ সাউথ ফাউন্ডেশনের নামে এফডিআর করেছে তা সাধারণ তহবিলে স্থানান্তর করতে বলা হয়েছে। এই এফডিআরগুলো শীঘ্রই নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির নামে করতে সুপারিশ করা হয়েছে।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফ্যাকাল্টিতে ডিন অথবা চেয়ারম্যান নিয়োগ এবং শিক্ষা কার্যক্রম সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে ট্রাস্টি বোর্ডের কোনো সুযোগ নেই। তবে ট্রাস্টিবোর্ড চেয়ারম্যান অবৈধ ভাবে সে ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন। যা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী অবৈধ। তাই বোর্ড অব ট্রাস্টির ২১তম সভার সিদ্ধান্ত বাতিল করে ১১তম সভার সিদ্ধান্ত কার্যকরের সুপারিশ জানিয়েছে তদন্ত কমিটি। অন্যদিকে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির প্রত্যেক ফ্যাকাল্টি থেকে প্রতিনিধি নিয়ে উপাচার্যের নেতৃত্বে ভর্তি কমিটি গঠনের কথা বলেছে কমিটি। এই কমিটিই ভর্তি পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

বাংলাদেশ