ফেসবুকে গুজব ও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

ফেসবুকে গুজব ও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো ধরনের যাচাই-বাচাই ছাড়া বিভিন্ন ইস্যুতে ফেসবুকে গুজব ও অপপ্রচার চালানোর ফলে ফেসবুক এখন একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজ সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

চলমান শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে সরকার কোনো রকম বিব্রত নয় বলেও মন্ত্রিসভার সদস্যদের জানান তিনি।

এর আগে গতকাল রবিবার সকালে গণভবনে অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কোনো ধরনের গুজব ও অপপ্রচারে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আধুনকি প্রযুক্তি শিক্ষা গ্রহণের কাজে ব্যবহার করতে হবে। এটি যেন অপব্যবহার করা না হয়। ফেসবুকে অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে। নোংরা কথাবার্তা ব্যবহার যেন না হয়।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে কয়েকজন মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের আন্দোলে উদ্যোগ জানালে তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতো দুর্বল নার্ভের হলে কিভাবে চলবে? শিক্ষার্থীদের আন্দোলনতো তেমন কোনো মারাত্মক আন্দোলন হয়নি। ওরাতো (শিক্ষার্থীরা) আন্দোলন শুরুই করতে পারেনি। রোদে পুড়বে, বৃষ্টিতে ভিজবে তাহলেই না আন্দোলন জমবে!

‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ এর খসড়ার বিষয়ে আলোচনায় কয়েকজন মন্ত্রী বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনার মাধ্যমে গুরুতর আহত করলে বা প্রাণহানি ঘটানো হলে চালকের সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ডের প্রস্তাব করেন। এর স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে মন্ত্রীরা বলেন, ১৯৮২ সালে এ শাস্তি ৭ বছর ছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে বাস-মালিক শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে শাস্তি কমিয়ে ৩ বছর করা হয়।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ও আইন মন্ত্রণালয় অনেক পর্যালোচনা করে এক্ষেত্রে শাস্তি পাঁচ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই পাঁচ বছরই রাখাটাই যু্ক্তিযুক্ত হবে।’

বৈঠকে আইন বিষয়ে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহজান খান কিংবা এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা কিছুই বলেননি। তবে এক পর্যায়ে নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেন, রাস্তাঘাটের উন্নয়নে বর্তমানে আগের চেয়ে সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে।

বৈঠকে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, শুধুমাত্র ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে ওয়েট মেশিন রয়েছে অন্যান্য রোডে মেশিন নেই। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আরও ৪০টি সড়কে ওয়েট মেশিন স্থাপনের প্রকল্প উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে যত সংখ্যক গাড়িকে রেজিস্ট্রেশন দেয়া হচ্ছে তত সংখ্যক ড্রাইভার সৃষ্টি হচ্ছে না। এটা একটা বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, এডিবি’র সহায়তায় তারা ১ লাখ দক্ষ ড্রাইভার তৈরি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে দক্ষ ড্রাইভারের সমস্যা কিছুটা হলেও কমবে।

গত ২৯ জুলাই (রবিবার) রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হন। ওই ঘটনার পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান করে বেপোরোয়া বাস চালককে ফাঁসি, ফিটনেসবিহীন গাড়ি এবং লাইসেন্স ছাড়া চালকদের গাড়ি চালনা বন্ধসহ ৯ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে গত শনিবার থেকে এ আন্দোলন সংঘর্ষে রূপ নেয়।

Featured বাংলাদেশ শীর্ষ খবর