আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজধানীতে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ভাংচুরের ভয়ে গাড়ি সড়কে নামাননি পরিবহণ মালিক শ্রমিকরা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে গাড়ি নামানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। দেখা যাক তাঁরা কী করে।
তিনি আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকের আন্দোলনের মাত্রা ততটা তীব্র না। আশা করি সব ঠিক হয়ে যাবে। যানচলাচলও স্বাভাবিক হবে। দুর্ভোগ কমবে নগরবাসীর।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বিএনপির পক্ষ থেকে পদত্যাগের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির নেতাদের এখন আর কাজ কী। তারা কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ভর করবে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ওপর ভর করবে। তাদের সাহস, ক্ষমতা ও সক্ষমতা কোনোটাই নেই।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ৯ দফা দাবি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, তারা যে দাবি দিয়েছে, সব সমাধান হয়ে যাবে প্রস্তাবিত পরিবহন আইন সংসদে পাস হলে। আইনের খসড়া আগামী মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন হবে। এরপর সংসদে পাস হবে। আইন পাস হওয়ার পর বাস্তবায়ন যখন হবে, তখন সব সমস্যারই সমাধান হবে, তাদের দাবি পূরণ হয়ে যাবে।
সেতুমন্ত্রী মনে করেন, এই আইন বাস্তবায়ন হলে রাস্তায় মাছির মতো পাখির মতো যে মানুষ মারা যায়, এটা আর থাকবে না। সবাই সতর্ক হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন আইনে পথচারীদেরও রাস্তায় চলাচলের যে নিয়ম সেটাও উল্লেখ আছে। শিক্ষার্থীরাও যাতে পথে সচেতনভাবে চলে সে ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আছে। মোবাইলে কথা বলতে বলতে যাতে কেউ রাস্তা পার না হয় সে বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে সড়কে দুর্ঘটনা বিষয়ে মামলাগুলো দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুলাই দুপুরে ঢাকার বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনে জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের পাল্লা দিচ্ছিল। এসময় বাসের জন্য অপেক্ষমান শিক্ষার্থীদের উপর বাস উঠিয়ে দেয় চালক। এতে ঘটনাস্থলেই দুই তাজা প্রাণ ঝড়ে যায়। আহত হন আরও কয়েকজন। হতাহত শিক্ষার্থীরা শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আব্দুল করিম সজীব।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ফুসে উঠে শিক্ষার্থীরা। সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। তাঁদের থামাতে কাজ করছে আইন শৃংখলা বাহিনী। এতে যোগ দেয় শ্রমিকরাও। সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।