প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনীতি যদি সঠিক হয়, তা হলে দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব। দেশের মানুষের উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা এখন আর ভিখারির দেশ নয়। বাংলাদেশ এখন মর্যাদার দেশ।
আজ শনিবার সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশে রাজনীতিটা হয়ে গিয়েছিল শো-অফ করার জন্য। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আমরা একদম প্রান্তিক মানুষ পর্যন্ত চলে গিয়েছি। একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কথা চিন্তা করে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি ।
এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে যারা ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছিল, যারা ক্ষমতার আশপাশে ছিল শুধু তাদেরই ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে মানুষ খুন করেছে। দুর্নীতি করেছে। অত্যাচার করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ মানুষের ঘরে ঘরে উন্নয়ন পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা মানুষের জন্য কাজ করেছি। যার কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
এর আগে স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু জানতেন ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয় লাভ করবে এবং পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না, এ কারণে অনেক প্রস্তুতি প্রয়োজন। সে কারণে তিনি লন্ডনে বসে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু সেসব বিষয় তখন মুখে বলেননি। তিনি অসহযোগ আন্দোলন ডাক দিয়ে স্বাধীনতার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেন। ৭ মার্চের ভাষণে তিনি গেরিলা যুদ্ধের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করি এবং বিশ্বজনমতের কারণে স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তানি বাহিনী।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, দেশে ফিরে এসেই যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলার দায়িত্ব তুলে নেন বঙ্গবন্ধু। পৃথিবীর ইতিহাস থেকে জানা যায়, বিশ্বের কোনো দেশ থেকে কোনো মিত্রবাহিনী ফেরত যায়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধী কয়েক মাসের মধ্যেই বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় বাহিনীকে ফেরত নেন। এটাও হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারণে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নিজে কী পেলাম এটা বড় কথা নয়, জনগণকে কী দিতে পারলাম সেটাই বড় কথা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র সাড়ে তিন বছরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছেন। তার পরে তাকে হত্যা করা হলো।
তিনি বলেন, পরিবার হারিয়ে আওয়ামী লীগ হয়ে গেছে আমার পরিবার। এখানে আমি বাবা-মার আদর ও ভাই বোনের ভালোবাসা পেয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। তারা আমাকে দুর্নীতিবাজ করার ষড়যন্ত্র করেছিল। আজ আমরা নিজেদের অর্থয়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারছি। দেশের উন্নয়নের কথা জনগণের মধ্যে তুলে ধরতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে সকাল ১১টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সভাপতিত্বে এ সভা শুরু হয়।
সভায় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি, প্রেসিডিয়াম সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকছাড়াও জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও দফতর সম্পাদকগণ উপস্থিত ছিলেন।