বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার সম্ভাবনা জিইয়ে রাখতে জিততেই হবে স্পেনকে। এমন কঠিন সমীকরণকে সামনে রেখে এশিয়ার পরাশক্তি ইরানের মুখোমুখি হয় স্পেন। ২০১৪ সালের পর যে দলটি কোন প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হারেনি তাদের বিপক্ষে ম্যাচটি যে সহজ হবে না সেটা ভালো করেই জানত রামেসরা। ইরানের শক্ত রক্ষণভাগের মোকাবিলায় ডিয়েগো কস্তার ভাগ্যপ্রসূত একমাত্র গোলে ইরানকে ১-০ গোলে হারায় স্পেন। দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখল ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়নরা।
কাজান অ্যারেনায় বুধবার বেশিরভাগ সময় খেলা হয় ইরানের অর্ধে। দাভিদ দে হেয়া ছাড়া বাকি ২১ ফুটবলার বেশিরভাগ সময় ছিলেন এশিয়ার দেশটির অর্ধে। চোট কাটিয়ে ফেরা দানি কারভাহাল আর জেরার্দ পিকে মাঝ মাঠে যেন গড়ে তুলেছিলেন নিজেদের রক্ষণ। একের পর এক আক্রমণ করলেও প্রথমার্ধে ইরানের জমাট রক্ষণ একবারের জন্যও ভাঙতে পারেনি সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ডি-বক্সের আশেপাশে একে অন্যকে পাসের পর পাস দিয়ে গেছেন ইসকো, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, দাভিদ সিলভারা। কিন্তু ডি-বক্সের ভেতরে একবারও সতীর্থকে খুঁজে পাননি তারা।
দুই উইং, মাঝ মাঠ কোনো দিক থেকেই ইরানের রক্ষণ ভাঙা যায়নি। জর্দি আলবা, সার্জিও রামোসদের ক্রস দিয়েগো কস্তা, লুকাস ভাসকেস পর্যন্ত যেতে পারেনি। তার আগেই বিপদমুক্ত করে ইরান।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ডি-বক্সের বাইরে থেকে আচমকা শটে চেষ্টা করেন সার্জিও বুসকেতস। ঝাঁপিয়ে দারুণ দক্ষতায় দলকে বাঁচান ইরানের গোলরক্ষক। ৫২তম মিনিটে কারভাহালের কাছ থেকে বল পেয়ে ক্রসবারের ওপর দিয়ে মারেন ইসকো। পরের মিনিটে করিম আনসারিফার্দের বুলেট গতির শট একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি।
গোলের জন্য স্পেনের অপেক্ষার অবসান হয় ৫৪তম মিনিটে। ডি-বক্সে ইনিয়েস্তা খুঁজে পান কস্তাকে। তিনি শট নেওয়ার আগেই বিপদমুক্ত করার চেষ্টা করেন মজিদ হোসেইনি। তার শট কস্তার পায়ে লেগে জালে জড়ায়। এবারের আসরে এটি কস্তার তৃতীয় গোল।
৬২তম মিনিটে ফ্রি কিকে সাঈদ এজাতোলাহির হেড জালে জড়ায়। সমতা ফেরানোর আনন্দে কিছুক্ষণের জন্য ভেসে যায় ইরান। তবে ভিএআর প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে অফ সাইডের জন্য গোল বাতিল করেন রেফারি। ৭০তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি প্রায় পেয়ে যাচ্ছিল স্পেন। কর্নার থেকে বল যাচ্ছিল গোললাইনের দিকে। ইরানির দুই ডিফেন্ডার শুয়ে পড়েন বলের ওপর। তার মাঝেই বলে লাথি দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন কস্তা ও পিকে। তবে শেষ পর্যন্ত গোলরক্ষক বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন।
৭৬তম মিনিটে একটুর জন্য বিপজ্জনক ক্রসের নাগাল পাননি মেহদি তারেমি। সাত মিনিট পর তিনি সতীর্থের আরেকটি ক্রসের নাগাল পান। কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে পারেননি হেড। বাকি সময়ে আর গোলের তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি ইরান।
আগামী সোমবার নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে মরক্কোর বিপক্ষে খেলবে স্পেন। একই সময়ে পর্তুগালের মুখোমুখি হবে ইরান। এই দুই ম্যাচের ওপর নির্ভর করছে কোন দুই দল যাবে দ্বিতীয় রাউন্ডে।