বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুর রহমান দোলন বলেছেন, ‘আমি মনে করি সবচাইতে ভালো কাজ মানুষের সেবা করা। মানুষের সেবা করার সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম হচ্ছে রাজনীতি। আর বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে আওয়ামী লীগ হচ্ছে সেই মঞ্চ যেখানে সাধারণ মানুষের কথা বলা যায়, সাধারণ মানুষের সেবা করা যায়।’
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খুলনায় একটি ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
খুলনাস্থ আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালীর পেশাজীবী ও সম্মানিত নাগরিকদের সম্মানে খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের সিনিয়র অফিসার্স ক্লাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইফতার মাহফিলে প্রায় এক হাজার লোক অংশ নেন, তাদের সবার বাড়ি ফরিদপুর-১ (আলফাডাঙ্গা-বোয়ালমারী-মধুখালী) আসনে। আরিফুর রহমান বলেন, ‘আজ পবিত্র শবে কদরের রাত।
সবাই ইবাদত বন্দেগি করব আল্লাহ আমাদেরকে যেন ইহকালে ও পরকালে শান্তিতে রাখেন। আমরা ইহকালে ভালো কাজ করলেই পরকালে শান্তিতে থাকার আশা করতে পারি।’
ঢাকাটাইমস সম্পাদক বলেন, ‘গত মাসেও আপনাদের অনেকের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছিল খুলনা সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে।
আপনারা ভোট দিয়ে নৌকাকে বিজয়ী করেছিলেন। আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। ইনশাআল্লাহ আপনারা আগামীতে এর প্রতিদান পাবেন।’ দেশের উন্নতি চাইলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই জানিয়ে দোলন বলেন, ‘গত নয় বছরে এই সরকার যে হারে উন্নতি করেছে সেই হিসেবে আলফাডাঙ্গা-বোয়ালমারী ও মধুখালীতে আরও বেশি উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল।
দুঃখজনক হলেও সত্য, এই তিন থানায় অনেক রাস্তা এখনও পাকা হয়নি। এর কারণ হলো আপনাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি সেভাবে কাজ করেননি।’ ফরিদপুর-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী দোলন বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি হলেন সেবক। আমি আপনাদের সেবক হতে চাই, আপনাদের চাকর হতে চাই। আপনারাই হচ্ছেন প্রকৃতপক্ষে মনিব।’ আরিফুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের আগে লেখা হয় অমুক ভাইকে তমুক মার্কায় ভোট দিন। এই লেখা কি শুধু লেখাতেই থাকবে নাকি বাস্তবায়ন হবে।
ফরিদপুর-১ আসনের জনগণ আপনাদের জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে কতটুকু সেবা পেয়েছেন সেই বিচারের ভার আপনাদের ওপরই দিলাম।’ ঢাকাটাইমস সম্পাদক বলেন, ‘এমপি সেবক হলে রাস্তা কেন কাঁচা, কাবিখায় কেন নয়ছয় হবে। কৃষক কেন ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। তিনি সেবক হলে কেন তার কাছে কেউ যেতে পারে না।
এই প্রশ্ন আমি আপনাদের কাছে রেখে গেলাম।’ চলমান মাদকবিরোধী অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়ে কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি বলেন, ‘আজ সারাদেশে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। আপনারা খবর নেন আপনাদের এলাকায় কারা মাদক কারবারি। আমরা চাই আমাদের সন্তানেরা যেন মাদক থেকে বিরত থাকে। এর জন্য শুধু পুলিশ প্রশাসন নয়, নেতাদেরও দরকার আছে।’ এ সময় তিনি প্রশ্ন রাখেন, গত ৯ বছরে আলফাডাঙ্গা-বোয়ালমারী ও মধুখালীতে কি একবারও মাদকবিরোধী সমাবেশ হয়েছে? উপস্থিত জনতা তখন চিৎকার করে বলেন, হয়নি।
দোলন বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ যে জায়গায় দাঁড়িয়ে, সেখানে শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। কয়েক দিন আগে বাজেট পেশ করা হয়েছে। সেখানে অর্থমন্ত্রী আরেকটি পদ্মা সেতুর কথা বলেছেন। সেই সেতুটি হবে আরিচা পয়েন্টে। আর এটা তখনই সম্ভব যখন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবেন। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবেন ১৫১ আসনে নৌকা বিজয়ী হলে।’ এ সময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, যিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন, যিনি সজীব ওয়াজেদ জয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে পারবেন শেখ হাসিনা তাকেই নৌকা প্রতীক দেবেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী দোলন জানান, তিনি এমপি হতে চান না, তিনি চান জনগণের সেবক হতে। চাকর হওয়ার মানসিকতা তার আছে।
মতবিনিময় ও ইফতার মাহফিলে আরও বক্তব্য দেন ফরিদপুর জেলা কৃষক লীগের সদস্য সচিব ও ফরিদপুর জেলা পরিষদের সদস্য শেখ শহীদুল ইসলাম, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শেখ শওকত হোসেন, বোয়ালামারী উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক আবদুর রহমান বাশার, আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান একে এম আহাদুল হাসান আহাদ, বোয়ালমারী কৃষক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফ শাহিনুল আলম, টগরবন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন, গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান ইকু, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিন্টু প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন জুবিলি জুট মিলের কর্মচারী বাবলু শেখ।