রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণে জি-৭ নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণে জি-৭ নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাস্তবায়নে মিয়ানমারের প্রতি চাপ প্রয়োগে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জি-৭ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার শেখ হাসিনা জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আউটরিচ অধিবেশনে বক্তব্য প্রদানকালে এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করারও আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের সমস্যার মূল মিয়ানমারেই নিহিত এবং তাদেরকেই তার সমাধান করতে হবে। রোহিঙ্গাদের অবশ্যই তাদের নিজগৃহে ফিরে যেতে হবে, যারা সেখানে শত শত বছর ধরে বসবাস করে আসছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের অধিকার নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করেছি। এই প্রক্রিয়া যাতে স্থায়ী ও টেকসই হয় সে জন্য আমরা এতে ইউএনএইচসিআরকে অন্তর্ভুক্ত করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে মিয়ানমার সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন।

স্থানীয় সময় শনিবার বেলা ১২টায় জি-সেভেন আউটরিচ সম্মেলনস্থল কেবেকের লা মালবের লে মানোর রিশেলো হোটেলে পৌঁছালে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

এ সময় দুই প্রধানমন্ত্রী কুশল বিনিময় করেন এবং আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনে অংশ নেন।

কানাডার প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে জি-সেভেন আউটরিচ সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার দুপুরে কেবেকে পৌঁছান শেখ হাসিনা। সন্ধ্যায় জি-সেভেন আউটরিচ সম্মেলনে যোগ দিতে আসা নেতাদের সম্মানে কানাডার গভর্নর জেনারেলের দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেন তিনি।

কেবেকে হোটেল শ্যাতো ফঁতেনেক-এ অবস্থান করছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

বিশ্ব অর্থনীতির ৭ পরাশক্তির জোট জি-সেভেনের সম্মেলনের পাশাপাশি আঞ্চলিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনার জন্য জোটের বাইরে থেকে বিভিন্ন দেশকে আলাদা বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। একেই বলা হয় জি-সেভেন আউটরিচ মিটিং।

সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও জি টোয়েন্টি জোটের বর্তমান সভাপতি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট; ক্যারিবিয়ান কমিউনিটির চেয়ার হাইতির প্রেসিডেন্ট; জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী; কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট; মার্শাল আইল্যান্ডসের প্রেসিডেন্ট; নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী; আফ্রিকান ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ার রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট; সেনেগালের প্রেসিডেন্ট; সেসেলসের প্রেসিডেন্ট; দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট; ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী; অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) সেক্রেটারি জেনারেল; জাতিসংঘ মহাসচিব এবং বিশ্বব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানায় কানাডা সরকার।

সফরের তৃতীয় দিন আজ রবিবার সকালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠকের পর টরন্টো যাবেন শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

টরন্টো থেকে প্রধানমন্ত্রী দেশের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে সোমবার সকালে কানাডার মিয়ানমারবিষয়ক দূত বব রে, কানাডার সাসকাচোয়ান প্রদেশের উপপ্রধানমন্ত্রী জেরেমি হ্যারিসন এবং কমার্শিয়াল কোঅপারেশন অব কানাডার প্রেসিডেন্ট মার্টিন জাবলোকি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

কানাডার স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে টরন্টো থেকে দেশের পথে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। দুবাইয়ে যাত্রাবিরতি করে মঙ্গলবার রাতে তার ঢাকা পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
খবর বাসস

Featured বাংলাদেশ শীর্ষ খবর