বেসরকারি খাতে পেনশন ব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে বাজেটে রূপরেখা থাকবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আজ সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে ২০১৮-১৯ বাজেট পূর্ববর্তী সাক্ষাৎকারে তিনি সাংবাদিকদের একথা জানান।
এসময় আইনের মধ্য থেকে ২৫ শতাংশ কালো টাকা সাদা করা যাবে। ভ্যাট হার হবে ৫ স্তর বিশিষ্ট এবং রোহিঙ্গাদের জন্য ৪শ’কোটি টাকা বরাদ্দ থাকবে বলেও জানান তিনি। ভোটের আগে সরকারের শেষ বাজেটে নতুন করে কোনো কর আরোপ হচ্ছে না জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘‘দেয়ার ইজ ভেরি লিমিটেড ইনক্রিজিং ট্যাক্স রেইট, হ্যাপিয়েস্ট থিংগস ফর দি পিপল, দ্যাটস অল।’
কর না বাড়লে রাজস্ব বাড়বে কীভাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের রাজস্ব আহরণকারী সংস্থা এনবিআরের লোকজনের মন মানসিকতায় পরিবর্তন হয়েছে। একইসঙ্গে আইনেও জটিলতা কমানো হয়েছে। তাই বেশি সংখ্যক মানুষ আয়কর দিচ্ছে। এ খাত থেকেই রাজস্ব বাড়বে।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম আয়কর রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা হবে ১৫-১৫ লাখ। কিন্তু সেটা ইতোমধ্যে ৩৩ লাখ ছাড়িয়েছে। এটা আগামীর জন্য খুব আশা জাগানিয়া বিষয়। আরও ভালো দিক হচ্ছে যে, নতুন করদাতাদের অধিকাংশই ইয়াং পিপল।
মুহিত বলেন, ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল অনেকটা হয়রানি মনে করে, অনেকেই ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করতো না। কিন্তু এখন এটা আর হয়রানি নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। এজন্য এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিনন্দন জানায়। কারণ তারা তাদের মন মানসিকতার অনেক পরিবর্তন করেছে। তাছাড়া হয়রানি কমানোর জন্য কিছু আইন-কানুনও পরিবর্তন করা হয়েছে।
‘আগের ২০-২৫ বছরের হিসাব-নিকাশ এখন এটা তিন বছরে নামিয়ে আনা হয়েছে। এতে করে জনগণ ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ট্যাক্স অফিসের সংখ্যা অনেক বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে ২০০টি উপজেলা পর্যায়ে ট্যাক্স অফিস রয়েছে। আগামীতে প্রতিটি উপজেলায় ট্যাক্স অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা বাস্তবায়ন করতে হয়তো দু-তিন বছর সময় লাগবে।
তিনি বলেন, কোন লেবেল থেকে আয়কর নেয়া হবে সেটায় তেমন কোনো পরিবর্তন হবে না। গতবারও কোনো পরিবর্তন করিনি। এটা করার কোনো মানেই হয় না। বিভিন্ন দেশে এ বিষয় ঘন ঘন পরিবর্তন করা হয় না।
ভ্যাটের বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১২ ভ্যাট আইন অনুযায়ী আমাদের কমিন্টমেন্ট ছিল ভ্যাটের স্তর একটি করা। কিন্তু সেটা আমরা করতে পারিনি। তবে আমরা আগামী বাজেটে ভ্যাটের স্তর ৯টি থেকে কমিয়ে ৫টিতে নামিয়ে আনবো। তবে আমাদের মূল টার্গেট হচ্ছে তিন স্তরে নামিয়ে আনা। ভ্যাটের সর্বোচ্চ হারটা ১৫ শতাংশই থাকবে। নিচেরগুলো পরিবর্তন করা হবে।
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয় সব থেকে বেশি হয় ভ্যাটের মাধ্যমে। আগামী বছরে তাই থাকবে আর দ্বিতীয় অবস্থানে আয়করকে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।