কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হকসহ দেশব্যাপী মাদক অভিযানে সব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ বুধবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
টেকনাফের ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হক বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার ঘটনায় কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শুধু একরাম নয় (মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে) যে কয়টি হত্যাকাণ্ড হয়েছে সবগুলোর বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে তদন্ত হবে। সেই তদন্তে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিচার হবে।
তিনি আরো বলেন, যেখানে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে, সেখানে একজন ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করে দেখবেন- গান ফায়ারটি সঠিক ছিল কি না। এই দেশে সেই ব্যবস্থা রয়েছে। যদি অন্যায়ভাবে কেউ গুলিবিদ্ধ হয়ে থাকে তাহলে ম্যাজিস্ট্রেটের তদন্ত অনুযায়ী সেই ব্যবস্থাও হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি (যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত) হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি এবং সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। প্রথমে আমাদের গোয়েন্দারা লিস্ট তৈরি করেছে- কারা কারা মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত, কারা কারা মাদক ব্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত, কারা সহযোগিতা করছেন। আমরা একটি নয়, পাঁচটি সংস্থার মাধ্যমে এই তালিকাটি তৈরি করেছি, তালিকায় যেসব নাম কমন সেই নামগুলো নিয়ে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে। পাশাপাশি আমাদের এনজিও, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক-ছাত্র-জনতা-পেশাজীবী সবাই এই যুদ্ধে শরিক হয়েছেন। প্রচার-প্রচারণাও আমরা চালাচ্ছি। মাদক বন্ধে ভারত আমাদের সহযোগিতা করছে। কিন্তু ইয়াবা প্রতিরোধের জন্য মিয়ানমার আমাদের কোনো সহযোগিতা করছে না, সেটাও আমরা জানিয়েছি।
তিনি বলেন, তাকে (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) সুনির্দিষ্টভাবে বলেছি, কোনো ক্রসফায়ার আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী করে না। কোনো হত্যাকাণ্ড নিরাপত্তা বাহিনী করে না। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কী করছে- লিস্ট নিয়ে, কমন লিস্টে যাদের নাম আছে তাদের বাড়িতে গিয়ে বা তাদের ধরে আইনের আওতায় আনার জন্য খুঁজে বেড়াচ্ছে। যারা সারেন্ডার করছে তাদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কিংবা রেগুলার কোর্টের মাধ্যমে শাস্তি ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যারা নির্দোষ তাদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। যারা সারেন্ডার করতে অস্বীকার করছে যারা চ্যালেঞ্জ করছে, যারা ফায়ার ওপেন করছে, আত্মরক্ষার্থে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীও গান ফায়ার করছে।
মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের পর ইতোমধ্যে প্রায় ১৩ হাজারের বেশি কারাবন্দি হয়েছে, জানিয়ে তিনি বলেন, এটা অনেকেই জানেন না। শুধু আপনারা দেখছেন নিহত হচ্ছে। এর পাশাপাশি কিন্তু একটা বিরাট সংখ্যক আটক হয়েছেন। তিনি (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) জানতে চেয়েছেন, কত মানুষ অভিযুক্ত হয়েছে? আমরা তাকে পুরো লিস্ট দিয়েছি। আমরা কী কী করছি, তা জানিয়েছি। তিনি সবকিছু অ্যাপ্রিসিয়েট করেছেন। তিনি বলেছেন, মাদকের বিস্তার বন্ধ করতে হবে।
জোসেফ (রাজধানীর শীর্ষ সন্ত্রাসী তোফায়েল আহমেদ জোসেফ) জেলে আছে নাকি বেরিয়ে গেছে, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি (জোসেফ) ভয়ানক অসুস্থ। তার সাজা এক বছর কয়েক মাস বাকি ছিল । তিনি মার্সি পিটিশন (ক্ষমা প্রার্থনা) আবেদন করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন করেছেন। তার কিছু অর্থদণ্ডও ছিল। সেগুলো আদায় সাপেক্ষে তাকে বিদেশে চিকিৎসার পারমিশন (অনুমতি) দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। এটুকু আমি জানি। এর চেয়ে বেশি কিছু জানি না।