আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জেলার তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবে সাতক্ষীরা আওয়ামী লীগ বৈঠকে বসছে ১২ মে শনিবার।
গণভবনে দুপুর ১২টায় এ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককে ঘিরে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করলেও জেলা আওয়ামী লীগে রয়েছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল।
এদিকে, সাতক্ষীরার শীর্ষ নেতারা সব ভেদাভেদ ভুলে এক সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে জেলা পর্যায়ে দলীয় সমস্যা ও সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে বলে আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এ জন্য দফায় দফায় বৈঠকও করেছেন তারা।
জেলার ৪ শীর্ষ নেতা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম, সহসভাপতি ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ.ফ.ম. রুহুল হক, আরেক সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক মনসুর আহমেদ নেতাকর্মীদের বিরোধ নিরসন করে আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
৭১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা ছাড়াও উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সভাপতি সম্পাদকসহ সহযোগী সংগঠনের নেতারা মিলে ৪২৫ জন নেতাকর্মী ১২ মে শনিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বৈঠকে যোগ দিতে সংশ্লিষ্টরা ইতোমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেও গেছেন।
এদিকে, কলারোয়া, শ্যামনগর, কালীগঞ্জ ও আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের শক্তিশালী গ্রুপিং, মামলা-পাল্টা মামলা বিভিন্ন সময় জেলা আওয়ামী লীগকে বিব্রত করলেও তা নিরসন করতে ব্যর্থ হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ।
এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলির অনেকদিন ধরে সম্মেলন না হওয়া, সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান ও সহসভাপতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ.ফ.ম. রুহুল হকের মধ্যকার আগামী আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিয়ে মনস্ত¡াতিক বিরোধ সব নেতাকর্মীদের কাছেই স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে।
অপরদিকে, সম্প্রতি জেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি শেখ জুয়েল হাসানকে হত্যার উদ্দেশে তার ওপর দলীয় কর্মীদের সন্ত্রাসী হামলা, পাটকেলঘাটায় বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সরদার মুজিব ও আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির সদস্য আরাফাত হোসেনের ওপর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমানের অনুগত কর্মীদের হামলা, কলারোয়ায় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে মিছিল ও তার সমাবেশে বাধা দেওয়া, বাস টার্মিনাল দখলসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিক্ষুব্ধ জেলা আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরাই।
আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এসব বিষয় নিয়ে এক পক্ষ অপর পক্ষকে ঘায়েল করতে দলীয় সভানেত্রীর সামনে তাদের অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করবেন।
জেলা আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক প্রতিনিধিদের গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠকটি কতটা শান্তিপূর্ণ হয় এবং বৈঠকের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা দলকে কতটা সুসংগঠিত করতে পারবে, তা দেখতে উন্মুখ মাঠপর্যায়ের দলীয় নেতাকর্মীরা।
বৈঠক প্রসঙ্গে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আালহাজ্ব নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মূলত সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সেখানে আলোচনা হবে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমস্যা ও সঙ্কট তুলে ধরা হবে সেখানে।’
জেলায় অনেক সমস্যা রয়েছে স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘যেগুলিতে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ ছাড়া সমাধান করা সম্ভব নয়, আলোচনায় সেগুলিই গুরুত্ব পাবে বেশি।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া সাতক্ষীরার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী ও দলের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, সেগুলো যাতে দ্রুত বাস্তবায়িত হয়, সে বিষয়টি নিয়েও দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা কামনা করা হবে।’