১৯৪৮ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় ইসরায়েলের ন্যাশনাল লাইব্রেরির লাইব্রেরিয়ানরা দেশীয় সেনাদের সঙ্গে ফিলিস্তিনে প্রবেশ করেছিলেন। উদ্দেশ্য- দুষ্প্রাপ্য বই পুস্তক সংগ্রহ। এসময় তারা ফিলিস্তিনের প্রত্যেকটি শহর এবং গ্রামের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করে অনেক মূল্যবান বই এবং পাণ্ডুলিপি হাতিয়ে নেয়। ধারণা করা হয়, জেরুজালেম থেকে ৩০ হাজার এবং হাইফা ও জাফা থেকে আরো ৩০ হাজার বই নিয়ে যায় ইসরায়েলিরা।
ইসরায়েল সরকার একে ‘সংস্কৃতি উদ্ধার অভিযান’ বলে আখ্যা দিয়েছে। তবে ফিলিস্তিনিরা তাদের অভিজ্ঞতা থেকে একে ‘সংস্কৃতিক চুরি’ বলেই মনে করে।
ইসরায়েলিদের এভাবে দুষ্প্রাপ্য বই সংগ্রহ প্রক্রিয়াটি প্রথম প্রকাশ পায় ২০০৮ সালে। এসময় পিএইচডি গবেষণারত এক ইসরায়েলি শিক্ষার্থী তাদের ন্যাশনাল আর্কাইভে রক্ষিত নথি দেখে হোঁচট খেয়ে যান। সেসব নথিতে ফিলিস্তিন থেকে ওইসব বই সংগ্রহ প্রক্রিয়ার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
সম্প্রতি এ ঘটনা নিয়ে ‘দ্য গ্রেট বুক রবারি’ নামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন ইসরায়েলি-ডাচ চলচ্চিত্র নির্মাতা বেনি ব্রানার। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় নির্মিত এ চলচ্চিত্রে একটা বিষয় বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে; হাজার হাজার বই যেগুলো একসময় ফিলিস্তিনিদের ঘরে ছিল যেসব বই কেনো এখনো ইসরায়েলি ন্যাশনাল লাইব্রেরির ভল্টে পড়ে রয়েছে। কেন তারা এসব বই প্রকৃত মালিকের কাছে ফেরত দিচ্ছে না। ইসরায়েলিরা যা করছে তা কি ‘সংস্কৃতি রক্ষা’ না ‘ডাকাতি’?
প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা ব্রানার ১৯৮৬ সাল থেকে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামে বসবাস করছেন। তার সাড়া জাগানো প্রামাণ্যচিত্রগুলোর মধ্যে- আল নাকবা: দ্য প্যালেস্টাইনিয়ান ক্যাটাসট্রফি ১৯৪৮, ইট ইজ নো ড্রিম, দ্য কনক্রিট কার্টেইন, স্টেট অব সাসপেনশন।