এসোসিয়েটেড প্রেসের(এপি) বিখ্যাত ‘কমব্যাট ফটোগ্রাফার’ হস ফাস মারা গেছেন। মূলত ভিয়েতনাম যুদ্ধের ছবি ক্যামেরায় ধারণ করে রাখার জন্য বিখ্যাত হন হস ফাস। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিলো ৭৯ বছর।
জার্মান বংশোদ্ভুত ফাস ফটোগ্রাফির জন্য বিভিন্ন সময় অনেকগুলো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেন, যার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত ছিলো ফটোগ্রাফির নোবেল হিসেবে খ্যাত পুলিৎজার পুরষ্কারও। ভিয়েতনাম যুদ্ধের উত্তাল সময়ে দক্ষিণ ভিয়েতনামের সায়গনে এপির ফটোগ্রাফার হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
সায়গনে থাকাকালীন সময়ে তিনি বেশ কয়েকজন তরুন ভিয়েতনামীকে ফটোগ্রাফির প্রশিক্ষন দেন। যাদের তোলা ছবির মধ্যে অনেকগুলোই পৃথিবীব্যাপী খ্যাতি ও স্বীকৃতি অর্জন করে।
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি রণক্ষেত্রে ১৯৬৭ সালে মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এজন তাকে পরবর্তীতে অনেক বছর হুইল চেয়ারও ব্যবহার করতে হয়।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে সংবাদ সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেসের ফটোগ্রাফি বিভাগের বৈশ্বিক প্রধান সান্তিয়াগো লিয়ো বলেন, ‘কঠিন পরিস্থিতিতে তোলা তার ছবিগুলো ছিলো অসাধারণ ও অবিস্মরণীয়।’
ফাস তার কর্মময় জীবন শুরু করেন গত শতাব্দীর ষাটের দশকের শুরুতে। পরবর্তীতে তিনি এপিতে যোগ দেন। এপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তার কর্মক্ষেত্র হয় পৃথিবীর সব বিখ্যাত ও ভয়াবহ যুদ্ধক্ষেত্র।
তিনি কাজ করেছেন আফ্রিকার জায়ারে (বর্তমানে কঙ্গো) ও আলজেরিয়াতেও। তবে তার জীবনের সবচেয়ে বিখ্যাত কাজগুলো হয়েছে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়। ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিভীষিকা ক্যামেরায় তুলে আনার মাধ্যমেই তিনি প্রথম পুলিৎজার পুরষ্কার পান ১৯৬৫ সালে।
তার তোলা অসংখ্য বিখ্যাত ছবিগুলোর মধ্যে আছে সায়গনে এক ভিয়েতকং সেনাকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যার দৃশ্য। এছাড়াও তার তোলা মার্কিন নাপাম বোমার হামলা থেকে পালাতে চাওয়া উলঙ্গ এক ভিয়েতনামি কিশোরীর কান্না দৃশ্যও পৃথিবীর অন্যতম সেরা কমব্যাট ফটোগ্রাফির নিদর্শন হিসেবে অভিহিত হয়।