অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করতে আরও ৫ শতাংশ করারোপের সুপারিশ

অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করতে আরও ৫ শতাংশ করারোপের সুপারিশ

অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করতে আরও ৫ শতাংশ কর আরোপের সুপারিশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

এছাড়া আরো কয়েকটি বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে করপোরেট ট্যাক্স আরও কমানো, বাস্তবায়নযোগ্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি এডিপি প্রণয়ন এবং করযোগ্য আয়সীমা দুই লাখ টাকা করা।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এসব সুপারিশ করা হয়।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আহম মুস্তফা কামাল লোটাস কামাল সংসদের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

কমিটির সভাপতি বলেন, `অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করতে বর্তমানে ১০ শতাংশ কর দেওয়ার বিধান রয়েছে। কমিটি তা আরো ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার সুপারিশ করেছে।`

করপোরেট ট্যাক্স বিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, `বাংলাদেশে ইংল্যান্ডের চেয়ে বেশি করপোরেট ট্যাক্স আরোপ করা রয়েছে। রাজস্ব বোর্ডকে এই কর আরো যৌক্তিক করার সুপারিশ করেছে কমিটি।`
কমিটি বাস্তবায়নযোগ্য এডিপি প্রণয়নের সুপারিশ করেছে জানিয়ে লোটাস কামাল বলেন, “বাজেট প্রণয়নের সময় বিশাল অংকের এডিপি দিলাম- আর সেটা বাস্তবায়ন ঠিক মতো হলো না। তা হলে তা কী অর্থ হয়? এমনটা করার প্রয়োজন নেই।“

উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে মূল এডিপিতে ৪৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে অর্থসঙ্কট, আশানুরূপ বৈদেশিক সহায়তা না পাওয়া এবং বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এডিপি কাটছাঁট করে ৪১ হাজার কোটি টাকা করা হয়। অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে এডিপি বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে মাত্র ২০ হাজার ৪১৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে সংশোধিত এডিপির ৫০ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছিল।

আয়কর রির্টানে সম্পত্তির হিসাব সঠিকভাবে না দিলে সেটিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ৫০ শতাংশ জরিমানা করার সুপারিশ করেছে কমিটি।

এ প্রসঙ্গে কমিটির সভাপতি বলেন, `যদি দেখা যায় কেউ সম্পত্তির হিসাব সঠিকভাবে দেয়নি এবং যদি তার অপ্রদর্শিত সম্পত্তি ৫০ লাখ টাকার ওপরে যায় সেক্ষেত্রে তার উপর যেন  বাড়তি ২৫ শতাংশ কর আরোপ করা হয় সে সুপারিশ করেছে কমিটি।`

এছাড়া কমিটি আয়কর কাঠামোর স্তর তিন ভাগ করার সুপারিশ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, `দুই লাখের পরে প্রথম পাঁচ লাখের জন্য ৫ শতাংশ, পরবর্তী পাঁচ লাখের জন্য ২০ শতাংশ এবং এর চেয়ে বেশি অংকের জন্য ২৫ শতাংশ আয়কর নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে।`

দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার নিরিখে অর্থমন্ত্রীর নেওয়া পদক্ষেপ সঠিক কিনা জানতে চাইলে সভাপতি বলেন, `অর্থমন্ত্রী অনেক ভালো করছেন। যে কোন সময়ের চেয়ে অন্যসব দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো রয়েছে।`

কমিটি সরকারকে অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানোর ও বিলাসদ্রব্যের ওপর কর বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বলেও জানান তিনি।

লোটাস কামাল আরো বলেন, `বৈঠকে অনেকে বলেছেন- সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় নতুন ব্যাংকের অনুমতি দিয়েছে। আমি বলেছি এটি কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়। গত ১১ মাসে ব্যাংকগুলো ১৯ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। এ খাতটি বর্ধনশীল।`

কমিটির বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতসহ কমিটির সদস্যরা অংশ নেন। এছাড়া বৈঠকে কমিটির বিশেষ আমন্ত্রণে অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান অংশ নেন।

অর্থ বাণিজ্য