শনিবার থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি, আবেদনপত্র সর্বোচ্চ ১২০ টাকা

শনিবার থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি, আবেদনপত্র সর্বোচ্চ ১২০ টাকা

কলেজগুলোতে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি প্রক্রিয়া শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে। আগামী ১ জুলাই থেকে একাদশ শ্রেণীর ক্লাস শুরু হবে।

শিক্ষামন্ত্রণালয়ের পূর্ব ঘোষণার সময় অনুযায়ী এ ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তানুযায়ী আবেদনপত্রের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা।

গত সোমবার প্রকাশিত ফলাফলে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির জন্য কলেজগুলোতে ভর্তির আবেদনপত্র ১২ মে, শনিবার থেকে আগামী ৬ জুন পর্যন্ত গ্রহণ করা হবে।

পুনঃনিরীক্ষণের ক্ষেত্রে যাদের ফল পরিবর্তন হবে তাদের জন্য ভর্তির আবেদন গ্রহণ করার শেষ তারিখ হবে ১৪ জুন।

বিলম্ব ফি ছাড়া ও বিলম্ব ফিসহ ভর্তি ও ডিডি করার শেষ তারিখ যথাক্রমে ২৮ জুন ও ১২ জুলাই। ৬০০ শিক্ষার্থীর বেশি ভর্তি করানোর অনুমোদন আছে এমন কলেজে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ৩০০ জনের অধিক আসন থাকা কলেজগুলোতেও অনলাইনে ভর্তি করা যাবে।

গত ২ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ‘২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্তকরণ’ শীর্ষক এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্তনুযায়ী ভর্তি হতে ইচ্ছুক ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র ও ভর্তি ব্যবস্থাপনার ব্যয় এবার ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কোনো ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে অনুমোদিত ফি-এর অতিরিক্ত কোনো অর্থ গ্রহণ করা যাবে না এবং সব ফি রশিদের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে।

এদিকে চলতি বছরও উচ্চমাধ্যমিক কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য কোনো বাছাই বা ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে না। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতেই শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

প্রকাশিত নীতিমালা অনুযায়ী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সব বিষয়ের ওপর সর্বোচ্চ ৪৩ পয়েন্ট ধরে ক্রমান্বয়ে ৪০ পয়েন্ট পাওয়া প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

বিজ্ঞান বিভাগে সম পয়েন্ট অর্জনের বিষয় নিষ্পত্তির জন্য সাধারণ গণিত অথবা উচ্চতর গণিত বা জীববিজ্ঞানে ৫ পয়েন্ট পাওয়াদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তাতে সমস্যা সমাধান না হলে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, পদার্থ ও রসায়ন বিষয়ে গ্রেড পয়েন্ট অগ্রাধিকার পাবে।

একইভাবে মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ের গ্রেড পয়েন্ট বিবেচনা করা হবে। এক বিভাগের প্রার্থী অন্য বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট পয়েন্ট সমান হলে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ে অর্জিত পয়েন্ট বিবেচনায় আনতে হবে। তাতেও নিষ্পত্তি না হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করে প্রার্থীদের পারস্পরিক মেধাক্রম সংগ্রহ করে প্রার্থী বাছাই করবেন।

এ সংক্রান্ত সব ধরনের নির্দেশনা www.educationboard.gov.bd ও www.dhakaeducationboard.gov.bd  ওয়েবসাইটে যথাসময়ে জানানো হবে।

নীতিমালায় যা-ই থাকুক নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ পাবে। সমমেধার প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিভাগীয় ও জেলা সদরের কলেজসমূহে ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কলেজের ৮৮% আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং বাকি ১২% আসনের মধ্যে ৭% বিভাগীয় সদরের বাইরের যে কোনো অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য ও ৫% মুক্তিযোদ্ধা সন্তান বা পোষ্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই কলেজে ভর্তির যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। সব কলেজ ১৭ জুন একযোগে মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবে। ভর্তির সময় প্রার্থীকে মূল একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট বা নম্বরপত্র ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রশংসাপত্র দাখিল করতে হবে। তবে প্রার্থী অন্য কোনো কলেজে ভর্তি হতে চাইলে তার ভর্তি বাতিলপূর্বক জমাকৃত মূল ট্রান্সক্রিপ্ট ফেরত দেওয়া হবে।

কলেজ কর্তৃপক্ষকে ভর্তি সংক্রান্ত সব তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। ভর্তির সব কার্যক্রমও যথাসম্ভব অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে। কারিগরি শিক্ষার ডিপ্লোমা কোর্সসমূহে ভর্তির ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষা (৫০% নম্বর) ও জিপিএ (৫০%) ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে।

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তির আবেদনপত্র বাবদ ১০ টাকা ও ভর্তি ব্যবস্থাপনা ব্যয় বাবদ ৫০ টাকা গ্রহণ করা যাবে। ভর্তির সময় শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত রেজিস্ট্রেশন ফি ১০০ টাকা, ক্রীড়া ফি ২৫ টাকা, রোভার স্কাউট বা গার্লস গাইড ফি ১৫ টাকা, রেড ক্রিসেন্ট ফি ১৫ টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফি ৭ টাকা, শাখা বা বিষয় পরিবর্তন ফি ২৫ টাকা গ্রহণ করা হবে।  পাঠ বিরতি ফি ১০০ টাকা ও বিলম্ব ভর্তি ফি ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উল্লেখিত নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটানো হলে বেসরকারি কলেজের ক্ষেত্রে পাঠদানের অনুমতি বা ¯স্বীকৃতি বাতিলসহ এমপিও বাতিল করা হবে। সরকারি কলেজের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে।

বাংলাদেশ