অন্যরা খেললেও সাকিব আল হাসান খেলবেন না। শতভাগ ম্যাচ ফিটনেস না থাকার পরও নিদাহাস ট্রফির ফাইনালসহ শেষ দুই ম্যাচে অংশ নেয়া সাকিব কলম্বো থেকে দেশে ফিরে মোহামেডানের হয়ে প্রিমিয়ার লিগের আজকের ম্যাচ খেলবেন না, মোহামেডান ম্যানেজার অন্তঃপ্রাণ ক্রিকেট সংগঠক ওয়াসিম খান কাল রাতেই জাগো নিউজকে এ খবর জানিয়ে দিয়েছিলেন।
সেটাই সত্য। তড়িঘড়ি করে শতভাগ ম্যাচ ফিটনেস না থাকা সত্ত্বেও দেশ মাতৃকার টানে জাতীয় দলে সার্ভিস দিতে কলম্বো গিয়েছিলেন সাকিব। নিদাহাস ট্রফির রবিন লিগে শ্রীলঙ্কার সাথে অঘোষিত সেমিফাইনাল আর ফাইনাল খেলে কাল দেশে ফেরা সাকিব আছেন বিশ্রামে।
তবে তার পাঁচ সহযোগি মুশফিকুর রহীম, সৌম্য সরকার, নাজমুল অপু, নুরুল হাসান সোহান ও আবু জায়েদ রাহি ঠিক প্রিমিয়ার লিগ খেলতে মাঠে নেমে পড়েছেন।
নিদাহাস ট্রফি খেলে গতকাল সোমবার সকাল সোয়া এগারটা নাগাদ রাজধানীতে পা রাখা এই পাঁচ জাতীয় ক্রিকেটার মঙ্গলবার প্রিমিয়ার লিগ নিজ নিজ ক্লাবের হয়ে খেলছেন।
শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি মুশফিকুর রহিম আর সৌম্য সরকার। মুশফিক মাঠে নেমেছেন তার ক্লাব লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জের পক্ষে। অন্যদিকে সৌম্যর দল অগ্রণী ব্যাংক। মিরপুরের হোম অফ ক্রিকেটে মুখোমুখি এই দুই দল।
অন্যদিকে ফতুল্লা স্টেডিয়ামে শেখ জামালের হয়ে খেলছেন তিন তিনজন জাতীয় ক্রিকেটার নুরুল হাসান সোহান, নাজমুল অপু ও আবু জায়েদ রাহি।
আর বিকেএসপি তিন নম্বর মাঠে মোহামেডানের খেলা কলাবাগানের সাথে। এ বছর প্লেয়ার্স বাই চয়েজে মোহামেডানের হয়ে নাম লেখানো সাকিব অবশ্য আজ খেলছেন না। বার বার বলা হয়েছে, বাঁ হাতের কনিষ্ঠা আঙুলের ইনজুরি সারলেও এখনো ম্যাচ খেলার শতভাগ ফিটনেস ফিরে আসেনি সাকিবের। তাই নিদাহাস ট্রফি খেলে দেশে ফিরেও আজ সাদা -কালো শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাঠে নামেননি দেশ তথা বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার।
এদিকে ঐতিহ্যবাহি মোহামেডানের অবস্থা এবার অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে খারাপ। দীর্ঘ দিন ঢাকার ক্লাব ক্রীড়াঙ্গনের ‘সুপার পাওয়ার’ মোহামেডান এখন কার্যত নাম সর্বস্ব দল। আগের সেই জৌলুস নেই। সাফল্যও নেই বললেই চলে। ফুটবলে শিরোপা নেই বহুদিন।
ক্রিকেটেও গত পাঁচ ছয় বছরে কোন ট্রফি উঠেনি মতিঝিল ক্লাব পাড়ায়। শেষ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে খালেদ মাসুদ পাইলটের নেতৃত্বে ২০০৭-২০০৮ মৌসুমে।
এবার প্লেয়ার্স বাই চয়েজে কাগজে কলমে মোহামেডান মাঝারি মানের দল হয়েছে। মাঠের পারফরম্যান্সও তাই। ১০ খেলায় পাঁচবার হার মানা দলটির পয়েন্ট ৯। চার জয়ের পাশাপাশি এক টাইয়ে নয় পয়েন্ট পাওয়া মোহামেডানের সুপার লিগ খেলা অনিশ্চিত।
এখন মোহামেডানের সুপার সিক্স খেলা নির্ভর করছে ‘যদি-তবের’ ওপর। আজ শেষ ম্যাচে কলাবাগানের সাথে জিততেই হবে। শুধু জিতলেই চলবে না। শেখ জামালকেও আবার হারতে হবে। মোদ্দা কথা, ব্রাদার্সের সাথে শেখ জামালকে হারতে হবে আর মোহামেডানকে কলাবাগানের সাথে জিততে হবে।
তার মানে মোহামেডানের পাশাপাশি জয় অত্যাবশ্যক শেখ জামালেরও । এমন সমীকরণ সামনে আছে বলেই আজ শেখ জামালের পক্ষে ঠিক মাঠে নেমেছেন কলম্বো ফেরত তিন ক্রিকেটার নুরুল হাসান সোহান, নাজমুল অপু ও আবু জায়েদ রাহি।
কিন্তু মোহামেডান গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সাকিবের সার্ভিস পাচ্ছে না। দলটির ম্যানেজার ওয়াসিম খান জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, সাকিবকে খেলার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সে বিনয়ের সাথে সে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। সাকিবের উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াসিম খান জানান, সাকিবের আঙুলের ক্ষত পুরোপুরি সারেনি। একটু ব্যথা আছে।
আর তড়িঘড়ি করে নিদাহাস ট্রফি খেলতে যাবার কারণে একটু ক্লান্তিও আছে। সব মিলে সাকিব বিশ্রামে। তবে দল সুপার লিগে উঠলে শুরুর দিকে কয়েকটি ম্যাচ খেলবে।
ওয়াসিম আরও যোগ করেন, সাকিব বলেছে- ‘সুপার লিগে উঠলে আমি আইপিএল খেলতে যাবার আগে ম্যাচ প্র্যাকটিস হিসেবেই সুপার লিগের কয়েকটি ম্যাচ খেলে যেতে চাই। ’
বলার অপেক্ষা রাখে না , সাকিব আদৌ সে সুযোগ পাবেন কিনা সন্দেহ। আজ শেখ জামাল জিতে গেলে মোহামেডানের বিদায় ঘন্টা বেজে যাবে। তখন আর সুপার লিগ খেলা হবে না মোহামেডানের। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে অাইপিএল খেলতে যাবার আগে দেশে দু একটি ম্যাচ আর খেলে যাবার সুযোগ থাকবে না সাকিবের।
প্রসঙ্গতঃ আগামী ১৩ এপ্রিল শুরু ভারতের আইপিএল। আর আজ প্রথম পর্ব শেষে আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে শুরু প্রিমিয়ার ক্রিকেটের সুপার লিগ।