বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার কমে সাড়ে নয়শ কোটি ডলার হলো। বুধবার দিন শেষে তা নেমে যায়। এশিয়ান ক্লিয়রিং হাউস (আকু) পেমেন্ট করার ফলে তা নেমে ৯৫৮ কোটি ডলার দাঁড়ায়। এদিন সন্ধ্যায় ৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলারে আকু পেমেন্ট করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আকু পেমেন্ট করলেই প্রতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রির্জাভে চাপ তৈরি হচ্ছে। আবারও চাপে পড়ল বাংলাদেশ ব্যাংকের রির্জাভ।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, শিগগিরই রির্জাভ আবার বেড়ে যাবে। এই চাপ সাময়িক।
এর আগে এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখে তা এক হাজার কোটি ডলার (দশ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়। ফলে টানা তিন সপ্তাহ তা দশ বিলিয়ন ডলারের ওপরে ছিলো।
গত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং হাউজ (আকু) পেমেন্ট করার পর রিজার্ভ ১০ বিলিয়নের নিচে নেমে এসেছিলো। ফলে টানা দেড় মাস পর এপ্রিল মাসে তা আবার ১০ বিলিয়ন ছাড়িয়েছিলো।
সূত্র জানায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রির্জাভ ১০ বিলিয়ন ছাড়ায়। কিন্তু মার্চের প্রথম সপ্তাহে এসে আকু পেমেন্ট করতে হয় বাংলাদেশ ব্যাংককে। ফলে তা নেমে আসে।
জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বর থেকে সর্বশেষ ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় চার মাস এই রিজার্ভ এক হাজার কোটি ডলারের নিচে অবস্থান করে। ফলে দীর্ঘ দিন চাপের মুখে ছিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রির্জাভ। তারপর সামান্য কয়েক দিন তা দশ বিলিয়নে অবস্থান করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গত বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রির্জার্ভ কমে প্রায় ৯০০ কোটি ডলারে নেমে আসে। অক্টোবর মাসে তা আবার হাজার কোটি ডলার ছাড়ায়। তবে নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তা ৯০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি অবস্থান করছিলো। তবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে তা বাড়তে শুরু করে।
সূত্র জানিয়েছে, চাহিদা অনুপাতে ডলারের সরবরাহ না বাড়ায় টানা ২২ মাস বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে থাকার পর গত সেপ্টেম্বরে তা ৯ বিলিয়নে নেমে আসে। এর পর অক্টোবরে তা আবার ১০ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়। নভেম্বরে আবার নেমে আসে ৯ বিলিয়নে। ডিসেম্বর জুড়ে এটি ৯ বিলিয়নের ঘরে ছিল।
সূত্র বলছে, রিজার্ভের ওপর চাপ থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক সেই সময় থেকে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ডলার বিক্রি করছে না। একই সঙ্গে আমদানির ক্ষেত্রে কোন ধরনের পণ্য আনা হচ্ছে তা দেখে ডলার দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন এর ফলে প্রবাসীরা বিগত মাসগুলোতে বেশি পরিমান রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছে। আর এসব সূচকের কারণে বাংলদেশ ব্যাংকের রির্জার্ভ বেড়েছে।
তথ্য মতে, প্রবাসীরা গত ডিসেম্বর মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স পাঠায়। সে মাসে তারা প্রায় ১১৪ ডলার দেশে পাঠায়। যা ছিলো এযাবৎ কালের সর্বোচ্চ। কিন্তু তার পরের মাস জানুয়ারিতে ডিসেম্বরের রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড হয়। জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা মোট ১২১ কোটি ডলার পাঠায়। ফেব্রুয়ারি মাসে পাঠায় একশ তের কোটি ডলার। আর মার্চে পাঠিয়েছে ১১০ কোটি ডলার। আর সবশেষ এপ্রিল মাসে প্রবাসীরা মোট ১০৮ কোটি ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছে।
এদিকে, ২০১১-২০১২ অর্থ বছরের প্রথম দশ মাসে মাসে প্রবাসী রেমিটেন্সর পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াল এক হাজার ৬১ কোটি মার্কিন ডলার।
এদিকে, ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ রেকর্ড করে। সে সময়ে এর পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় এগারশো কোটি ডলারের ওপরে।