মেক্সিকো সংলগ্ন সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে শিশু-কিশোরদের অবৈধ অনুপ্রবেশ বেড়েছে। আর অনুপ্রবেশকারী এসব শিশু-কিশোর কোনো অভিভাবকের সঙ্গে নয় বরং একাই সীমান্ত পার হয়ে আসছে। ইতোমধ্যে এমন কিছু শিশুকে দেশে ফেরতও পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
মেক্সিকো সীমান্ত সংলগ্ন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের কর্তৃপক্ষ এ তথ্য দিয়েছে। সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা প্রথমে এ এলাকায়ই অবস্থান করে। এ কারণে এ বিষয়টি টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে একটি অন্যতম রাজনৈতিক বিতর্কে পরিণত হয়েছে। অবশ্য সরকার ক্রমবর্ধমান শিশু-কিশোর অনুপ্রবেশকারীর এ সমস্যা সমাধানে সীমান্তে পাঁচটি অস্থায়ী আশ্রয়স্থল স্থাপন করেছে।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত অক্টোবর থেকে এ বছর এপ্রিলের শেষ নাগাদ সরকার সাড়ে ছয় হাজার অভিভাবকহীন শিশু-কিশোরকে আটক করেছে যারা মেক্সিকো সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করে। এ সংখ্যা একই সময়ে আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
তিনি আরো জানান, অনুপ্রবেশকারী শিশু-কিশোরদের মধ্যে বেশিরভাগই গুয়াতেমালা, হুন্ডুরাস এবং এল সালভাদর থেকে আসছে। এ দেশগুলো মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চলী সীমান্ত সংলগ্ন। আর এসব শিশু-কিশোরদের বেশিরভাগেরই বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। এর কম বয়সীও কিছু রয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ বেড়ে যাওয়ার কারণে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে টেক্সাস অঙ্গরাজ্য। সেখানে সান আন্তোনিও বিমানঘাঁটিতে স্থাপিত একটি আশ্রয়কেন্দ্রে দুইশ’ শিশু রয়েছে। সেখানে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ।
এখানে এসব শিশুরা সামরিক ব্যারাকে খুবই অপ্রশস্ত এবং ছোট্ট বিছানায় রাত যাপন করে।
টেক্সাস গভর্নর রিক পেরি অবশ্য এ পরিস্থিতির সমালোচনা করে গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ওবামার কাছে চিঠি লিখেছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে মানবিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে এবং কেন্দ্রীয় সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছে হোয়াইট হাউজ। তবে বিভাগের মুখপাত্র এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত মে তে কার্যকর হওয়া মেক্সিকোর একটি আইনই এসব শিশুকে সীমান্ত পারাপারের অনুমতি দিয়েছে। অনেক শিশু ভিসা ছাড়াই সীমান্ত পেরুনোর পর মানবিক কারণে সেখানে (মেক্সিকো সীমান্তে) অবস্থান করছে। আর এ কারণেই অনেক শিশু যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশের অনুমতি পেয়েছে।
এসব শিশুর বেশিরভাগই চোরাকারবারিদের মাধ্যমে এখানে আসে। আর এসব চোরাকারবারিদের অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের বা পরিচিত জনরাই ভাড়া করে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।