তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রশ্নে যে কোনো স্থানে আলোচনায়, এমনকি সংসদে যেতেও বিএনপি রাজি বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর আদাবরে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বাসা ‘ঢাকা হাউজিংয়ে’ তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মির্জা ফখরুল একথা বলেন।
হরতালে গাড়ি পোড়ানো ও অগ্নিসংযোগের মামলায় রিজভী এ মুহূর্তে জেলহাজতে রয়েছেন। ১৭ মে তার জামিন শুনানির দিন ধার্য আছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের ব্যাপারে সরকারকে আগে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার না মানলে দেশে যে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তার জন্য শুধুই সরকার দায়ী থাকবে।’
কারাগারে রিজভীর বন্দি অবস্থা সম্পর্কে তিনি ফখরুল বলেন, ‘রিজভী সাহেবের সঙ্গে সরকার যে আচরণ করছে তা স্বাধীনতাবিরোধী ও অমানবিক। রিজভীর মতো একজন বিজ্ঞ রাজনীতিবিদের সঙ্গে সরকারের এ আচরণ দেখে বোঝা যায়, অন্যদের সঙ্গে তারা আচরণ কেমন করছে।’
তিনি বলেন, ‘৩০ এপ্রিল গ্রেপ্তারের পর রিজভীকে এক কাপড়ে থাকতে দেওয়া হয়েছে। এখনো তাকে মেঝেতে শুতে দেওয়া হয় এবং পরিবারের সঙ্গে ঠিকমতো দেখা দেওয়া হয় না।’
‘সরকারের এই আচরণ দেখে গ্রাম্য রাজনীতির অত্যাচারী মোড়লের কথা মনে পড়ে যায়।’
রিজভীর স্ত্রী আরজুমান আরা আইভিকে তিনি ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তার জামিনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
উপস্থিত এক সাংবাদিক মির্জা ফখরুলকে প্রশ্ন করেন ‘আপনি পালিয়ে ছিলেন কেন?’। উত্তরে তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য এটা রাজনৈতিক কৌশল। ভারতের মহাত্মা গান্ধী থেকে শুরু করে বাংলাদেশের শেখ মুজিবুর রহমান সবাই কখনো না কখনো এমন রাজনৈতিক কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিলেন।’
রিজভীর অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘তাকে মুক্তি না দিলে দেশে যে আন্দোলনের স্রোত বইবে তাতে সরকার টিকতে পারবে না।’
এদিকে, রিজভীর স্ত্রী আরজুমান আরা আইভী বলেন, ‘জামিনের চেয়েও এখন রিজভীর ডিভিশন পাওয়া জরুরি। কারণ তিনি কোমর ভাঁজ করতে পারেন না। কারাগারকক্ষে তার শোবার খাট নেই। তাকে ধরে ধরে উঠতে হয়।’
আদাবরে রিজভীর বাসায় মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন, বিএনপির সহ-দপ্তর আসাদুল করিম শাহীন, শামীমুর রহমান শামীম, নির্বাহী কমিটির সদস্য হেলাল আহমেদ, জাসাসের যুগ্ম-সম্পাদক শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।