মাইশার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল হোলি উৎসবের দিন নিহত কলেজ ছাত্র রওনকের। সেই সম্পর্ক ছিন্ন করে তুহু নামের আরেক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে রওনক। সাবেক বান্ধবী মাইশা ও তুহুর দ্বিতীয় প্রেমিক মিলে রওনককে হত্যার পরিকল্পনা করে তাকে হোলি উৎসবে নিয়ে আসে। এরপরই সুযোগ পেয়ে রওনককে লক্ষ্মীবাজারের কেএফসির পাশে নিয়ে হত্যা করা হয়।
মঙ্গলবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহিম খাঁন। তিনি বলেন, তুহু রওনকের পাশাপাশি আরেকটি ছেলের সঙ্গে সমানতালে সম্পর্ক চালিয়ে আসছিল। এ নিয়ে ওই ছেলের সঙ্গে রওনকের প্রায়ই বাকবিতণ্ডা হতো। এর জের ধরে রওনককে খুনের পরিকল্পনা করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেমিক ওই যুবক। যেহেতু রওনকের সঙ্গে মাইসার পূর্বে সম্পর্ক ছিল। তাই মাইসাকে ব্যবহার করে রওনককে হোলি উৎসবে নিয়ে আসে ওই যুবক।
এরপর পূর্ব পরিকল্পনা মতো শাখারি বাজার শনি মন্দিরের সামনে রওনককে ঘিরে ফেলে ২০ থেকে ২৫ জন। এদের মধ্যে কয়েকজন রওনককে ছুরিকাঘাত করে। এ ঘটনায় মাইশাসহ মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মূল পরিকল্পনাকারী তুহুর দ্বিতীয় প্রেমিককে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তার নামও প্রকাশ করা হয়নি সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে ইব্রাহিম খাঁন বলেন, ঘটনার দিন রওনক কামরাঙ্গির চরের বাসা থেকে কলাবাগানে অন্য বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হয়। তুহুর অপর প্রেমিকের পরিকল্পনায় মাইশার প্ররোচণায় রওনকসহ আট বন্ধু শাখারি বাজার যায়। রওনক পৌঁছানোর আগেই ওই যুবক লক্ষ্মীবাজার কেএফসি রেস্টুরেন্টের সামনে কয়েকজনের সঙ্গে পরামর্শ করে। সে সময় কয়েকজনকে ছুরি সরবরাহ করে ওই যুবক। গ্রেফতারকৃতদের তথ্য অনুযায়ী এর মধ্যে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
রওনক শাখারি বাজার শনি মন্দিরের সামনে গেলে প্রথমে মারধর এরপর ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রওনককে মৃত ঘোষণা করেন। ডিসি আরও বলেন, তুহুর অপর প্রেমিক এবং খুনের পরিকল্পনাকারী ওই যুবককে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। সঙ্গত কারণেই তার নামটি বলছি না।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ফারহান নিজেই ছুরিকাঘাত করেছে। মূল পরিকল্পনাকারীসহ জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। তুহুকে কেন গ্রেফতার করা হলো না? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তুহুর দুই প্রেমিকের মধ্যে দ্বন্দের জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। কিন্তু ওইদিন তুহুর সঙ্গে তাদের কারও যোগাযোগ হয়নি এবং কথোপকথনের কোন রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও জানান, রওনক, মাইসা, তুহু কিংবা এই বন্ধুমহলের কেউ কোন নির্দিষ্ট এলাকা কিংবা একই প্রতিষ্ঠানের নয়। তারা ফেসবুকের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ে তারা একসঙ্গে মিলিত হয়। এদের মধ্যে কলেজ ছাত্র যেমন রয়েছে তেমনি ফলের দোকানিও রয়েছে। উঠতি বয়সীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের বিষয়ে তাদের পরিবারকে আরও সচেতন হওয়া উচিৎ উল্লেখ করে ডিসি ইব্রাহিম বলেন, তারা কোথায় কী করছে, কোথায় যাচ্ছে এসব বিষয়ে পরিবারের আরও নজরদারি বাড়ানো উচিৎ।