গোল লাইন টেকনোলজির ব্যবহার নিয়ে তুমুল বিতর্ক। কারও মতামত, টেকনোলজির ব্যবহারে ফুটবল আসল সৌন্দর্যই হারিয়ে ফেলবে। কারও মতে, টেকনোলজির ব্যবহারে খেলাটা হবে আরও নিখুঁত। তবে, দ্বিতীয় মতামতকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে ফিফা। রাশিয়া বিশ্বকাপেই ব্যবহার হচ্ছে গোল লাইন টেকনোলজি। যার নতুন নাম ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর)। শুধু গোলই নয়, যে কোনো বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিতেই ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির সাহায্য নিতে পারবেন মাঠে খেলা পরিচালনাকারী রেফারি।
কয়েক মাস ধরেই বিশ্বকাপে ভিএআর চালু করা হবে কি না তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। অবশেষে শনিবার জুরিখে এক বৈঠকের পরে ফুটবলের আইন যারা তৈরি করে, সেই দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ডের (আইএফএবি) ভোটাভুটিতে অনুমোদন হয়ে গেলো বিশ্বকাপে ভিএআর চালু করার।
জার্মানি-ইতালি এবং ইংল্যান্ডের স্থানীয় লিগ এবং টুর্নামেন্টগুলোর কিছু ম্যাচে ভিএআর পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছিল। শনিবার জুরিখে আইএফএবির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, এবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে বিশ্বকাপে।
ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফ্যান্তিনো শনিবার বলেন, ‘আজ থেকে ভিএআর সিস্টেম ফুটবল ম্যাচের একটা অঙ্গ হয়ে গেল। আমরা এই পদ্ধতি নিয়ে খুব ইতিবাচক। কোচ-ফুটবলার এমনকি সমর্থকদেরও আমরা বলছি, এই পদ্ধতি প্রয়োগের পর দারুণ ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে। অনেক বছর ধরেই আমরা এ নিয়ে কাজ করছি।’
যদিও রাশিয়া বিশ্বকাপে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) পদ্ধতি চালু করার ব্যাপারে এখনও একটা বাধা রয়ে গেছে। কারণ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ বিষয়ে অনুমোদন দিলেও, বিষয়টা চূড়ান্তভাবে পাশ হতে হবে ফিলার কাউন্সিলে। যা চলতি মাসের শেষের দিকে কলম্বিয়ায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ফিফার ওই কাউন্সিল বৈঠকেই বিষয়টা উত্থাপন করা হবে এবং চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে। এ সম্পর্কে ফিফা প্রেসিডেন্ট ইনফ্যান্তিনো বলেন, ‘কাউন্সিল যাতে এ ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়, সে ব্যাপারে বিশদ বোঝানো হবে। আশা করি কাউন্সিল এই প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা বুঝবে।’
দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ডের (আইএফএবি) পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ফুটবলকে আরও স্বচ্ছ ও ত্রুটিমুক্ত করবে এই প্রযুক্তি। যার ফলে বিশ্ব ফুটবলে নতুন দিক উন্মোচিত হবে।’
২২ মার্চ বুন্দেসলিগায়ও এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে। এরপর প্রতিটি দেশের সব টুর্নামেন্টেই এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে। ভিএআর পদ্ধতিতে মূলতঃ যে চারটি বিষয় দেখা হবে তা হল- গোল হয়েছে কি না, পেনাল্টির সিদ্ধান্ত সঠিক কি না, সরাসরি লাল কার্ডের সিদ্ধান্ত সঠিক কি না এবং ভুল ফুটবলারকে কার্ড দেখানো হল কি না।
এই পদ্ধতি প্রথম প্রয়োগ করা হয় ২০১৬ সালে ক্লাব বিশ্বকাপে। এরপর ২০১৭ কনফেডারেশন্স কাপে এবং অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। এবার তা দেখা যাবে রাশিয়া বিশ্বকাপে। এতে ফুটবলে অনেক স্বচ্ছতা আসবে বলেই মনে করছেন সবাই।