গণহত্যা দিবসে ১ মিনিট অন্ধকারে থাকবে দেশ

গণহত্যা দিবসে ১ মিনিট অন্ধকারে থাকবে দেশ

২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবসে’ রাতে এক মিনিট অন্ধকারে (ব্ল্যাক-আউট) থাকবে পুরো দেশ। রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত জরুরি স্থাপনা ছাড়া সারাদেশে প্রতিকী ‘ব্ল্যাক আউট’ থাকবে।

গণহত্যা দিবস পালন এবং স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে সম্প্রতি এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

গণহত্যা দিবসে ১ মিনিট বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখাসহ দুটি দিবস পালনে নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ওই সভার কার্যপত্র পাঠানো হয়েছে।

এক মিনিট ব্ল্যাক আউটের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, গণযোগাযোগ অধিদফতর, জেলা প্রশাসক (সকল) ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (সকল)।

গণহত্যা দিবস পালনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ওই সভায় বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে এক ভয়াবহ রক্তাক্ত ইতিহাসের দিন। সেই কালরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কাপুরুষের মতো রাতের অন্ধকারে পাশবিক হিংস্রতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুমন্ত বাঙালির উপর। পাকিস্তানি সামরিক শাসক ইয়াহিয়ার নির্দেশে, জেনারেল টিক্কা খানের নেতৃত্বে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সামরিক অভিযানে সংঘটিত হয় ইতিহাসের জঘন্যতম নারকীয় গণহত্যা।

অন্য যেকোনো দিনের চেয়ে এই দিন শুধু আমাদের কাছেই নয়, বিশ্বের গণহত্যার ইতিহাসে এক অনন্য উদাহরণ ও স্মরণযোগ্য দিন। একদিনে এত মানুষ হত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বর্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত বাংলাদেশিদের উপর যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তাকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করছে বাংলাদেশ। গত বছর প্রথম গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবেও এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ের কার্যক্রম নেয়ার জন্য গত বছরের ১১ মার্চ সংসদে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ মার্চ জাতীয়ভাবে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা করা হয়।

আন্তর্জাতিকভাবে ৯ আগস্ট দিবসটি পালিত হলেও বাংলাদেশে চালানো পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা অন্য যেকোনো দিনের গণহত্যার চেয়ে অনেক বেশি রক্তক্ষয়ী ও জঘন্য। ফলে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার।

এবার গণহত্যা দিবসে গণহত্যার উপর দুর্লভ আলোকচিত্র বা প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী হবে। সারাদেশে ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের স্মরণে বিশেষ মোনাজাত বা প্রার্থনা হবে। এছাড়া আলোচনা সভা, গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গীতিনাট্য বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে বলেও আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর