কালামকেই ফের প্রেসিডেন্ট চায় নেটিজেন প্রজন্ম!

কালামকেই ফের প্রেসিডেন্ট চায় নেটিজেন প্রজন্ম!

রেইসিনা হিলে অবস্থিত ভারতের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ভবনে পৌঁছার দৌড়ে প্রণব মুখোপাধ্যায় হয়ত অনেক রাজনীতিকেরই সমর্থন পাবেন, তবে ভারতের বিশাল নেটিজেনদের ( ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রজন্ম) প্রথম পছন্দ মিসাইল ম্যান খ্যাত সাবেক প্রেসিডেন্ট এপিজে আব্দুল কালাম।

ভারতের এই বিশাল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রজন্মের কালামের প্রতি সমর্থন অবশ্যই দেশটির প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিবর্তন। এরইমধ্যে কালামের সমর্থনে ইন্টারনেটে শুরু হয়েছে প্রচারণার জোয়ার। ফেসবুকে কালামের সমর্থনে খোলা হয়েছে ফেসবুক ফ্যান ক্লাব। প্রতিদিনই পত্রিকাগুলোতে সাইটে জমা হচ্ছে কালামের পক্ষে সমর্থন সূচক অসংখ্য টুইটার।

এই ‘ট্রেন্ডজ’ ভারতের রাজনীতিতে বিরাজ করা দীর্ঘদিনের অচলায়তনের বিরুদ্ধে নতুন প্রতিবাদ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে বিশ্লেষকদের কাছে। ভারতের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মত মানুষ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ব্যাপারে মতামত দিচ্ছেন এবং প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের ব্যাপারে নিজেদের পছন্দ অপছন্দের কথা খোলামেলা জানাচ্ছেন।

এমনই একজন সুমিত নাগপাল টুইটারে লিখেছেন, ‘এই মুহুর্তে এপিজে আব্দুল কালামই একমাত্র ব্যক্তি যিনি ভারতের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য সবচেয়ে বেশি যোগ্য।’

‘উচ্চ শিক্ষিত’, ‘বিনয়ী’, ‘জনগণের রাষ্ট্রপতি’ এগুলোই হলো আব্দুল কালাম সম্পর্কে ইন্টারনেটে প্রকাশিত মানুষের অভিব্যক্তি। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো কালামের এই সমর্থকদের মধ্যে রয়েছে সব বয়সী লোক।

এরইমধ্যেই কালামের সমর্থনে ফেসবুকে খোলা হয়েছে একাধিক ফ্যান ক্লাব। এমনই একটি ফ্যান পেজ,‘উই ওয়ান্ট শ্রি এপিজে আব্দুল কালাম অ্যাস প্রেসিডেন্ট অ্যাগেইন।’ অপর একটি গ্রুপ ‘আব্দুল কালাম ফর প্রেসিডেন্ট’ নামে অনেক আগেই প্রচারণা শুরু করেছে।

ফেসবুকের মাধ্যমে ভারতীয় নেটিজেনরা জানাচ্ছেন, ‘এই প্রথম ভারতের জনগণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পক্ষে তাদের আওয়াজ তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।’

ফেসবুকে কালামের সমর্থনে দৃঢ় আওয়াজ তুলে ধরছেন তার সমর্থকরা। আব্দুল কালামের পক্ষে রাজনীতিকদের অবস্থান গ্রহণের অনিচ্ছাকে তীব্রভাষায় আক্রমন করছেন তারা। রাজনীতিকদের আচরণে ক্ষুব্ধ এক ভারতীয় জিতেন গজারিয়া টুইট করেছেন, ‘আব্দুল কালাম হয়তো প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না, কারণ সরকারি টাকায় বিদেশ ভ্রমণের জন্য তার কোনো পরিবার নেই এবং সরকারি জমি দখলের কোনো অভিজ্ঞতাও তার নেই।’

তবে এটা অস্বীকার করা যাবে না যে ভারতের মোট জনসংখ্যার খুব অল্প একটি অংশই এই ইন্টারনেট  বিতর্কে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতের প্রতিফলন নয় বলে রাজনীতিকরা এই সব প্রচারণাকে এখনও সহজেই অগ্রাহ্য করতে সক্ষম হচ্ছেন।

এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অনিভার অরভিন্দ  বলেন, ‘যদিও ভারতের মোট জনসংখ্যার মাত্র ছয় শতাংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু তাদের আওয়াজ সরকারের কর্ণকুহরে পৌঁছানোর জন্য যথেষ্ট।’ ইন্টারনেটে প্রতিধ্বনিত এই আওয়াজ ভারতের বিশাল শিক্ষিত মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্তের মতামতের প্রতিফলন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তবে ফেসবুকে কালামের পক্ষের প্রচারণা একটি ভিন্ন মাত্রার সংযোজন বলে উল্লেখ করেন অরবিন্দ। ইন্টারনেট, ফেসবুকে তার সমর্থনে প্রচারণা চলছে, আবার অপরদিকে এসব সাইটে যে সব মানুষ কালামকে পছন্দ করেন না তারাও তাদের মনোভাব ও অসমর্থন ব্যক্ত করছেন। এটিকেই এই প্রচারণার সবচেয়ে বড় তাৎপর্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক