চ্যাম্পিয়ন্স লীগে শেষ ষোলর ফিরতি লেগে নেইমারের অংশগ্রহণের আশা শেষ হয়ে গেছে। তার পিতা জানিয়েছেন, অন্তত ছয় সপ্তাহের জন্য ব্রাজিলীয় সুপার স্টারকে মাঠের বাইরে কাটাতে হবে। ফলে রিয়ালের বিপক্ষে আসন্ন ম্যাচে প্যারিস সেন্ট জামেইয়ের (পিএসজি) হয়ে খেলার আর কোন সম্ভাবনাই রইলো না বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবল তারকার।
মঙ্গলবার ইএসপিএনকে নেইমারের পিতা সিনিয়র নেইমার বলেন, ‘পিএসজি জানে আসন্ন ম্যাচে নেইমার খেলতে পারবে না। অস্ত্রোপচার হোক বা না হোক, অন্তত ছয় থেকে আট সপ্তাহ তাকে চিকিৎসাধীন থাকতে হবে।
এর আগে পিএসজির কোচ উনাই এমেরি দাবি করেছিলেন, নেইমারের অস্ত্রোপচার করা হবে কি-না সে বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আগামী ৬ মার্চ রিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচে তার অংশগ্রহণের সম্ভাবনা ‘খুবই ক্ষীণ’।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, নেইমারের ডান পায়ে চিড় ধরেছে। গত রোববার মার্সেইয়ের বিপক্ষে লীগ ওয়ানের ম্যাচে আঘাত পান নেইমার। ম্যাচে পিএসজি ৩-০ গোলে জয়লাভ করেছিল।
প্রাক ডেস প্রিন্সেসে অনুষ্ঠিত লীগ ওয়ানের ম্যাচে গুরুতর আহত ব্রাজিলীয় সুপার স্টারের ব্যাথার তীব্রতা এতোটাই ছিলো যে, স্ট্রেচারে করে তাকে মাঠের বাইরে পাঠাতে হয়। পরে তার পায়ে চিড় ধরেছে বলে ডাক্তারী পরীক্ষায় নিশ্চিত করা হয়।
কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, পায়ের সমস্যা থেকে পরিপূর্ণ পরিত্রাণ দেয়ার জন্য নেইমারের পায়ে অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছেÑ যাতে আসন্ন বিশ্বকাপে এই ইনজুরির প্রভাব না পড়ে। রিপোর্টে বলা হয়, এ কারণে মৌসুমের বাকি সময়ের অধিকাংশ মাঠের বাইরেই কাটাতে হবে নেইমারকে।
তবে মার্সেইয়ের বিপক্ষে কাপ ডি ফ্রেঞ্চের ম্যাচকে সামনে রেখে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে পিএসজি কোচ এমেরি দাবি করেন, ‘নেইমারের পায়ে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন নেই। এ সংক্রান্ত প্রকাশিত রিপোর্ট সঠিক নয়।’
দুই সপ্তাহ আগে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স লীগের প্রথম লেগের ম্যাচে স্বাগতিক রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ৩-১ গোলে পরাজিত হয়েছিল পিএসজি। যে কারণে ইউরো আসরে ফরাসি জায়ান্টদের শেষ আটে পৌঁছানোর সুযোগ হুমকির মুখে পড়েছে।
এদিকে ব্রাজিলীয় পত্রিকা গ্লোবো এস্পারটে দাবি করেছে, নেইমারকে অবশ্যই অস্ত্রোপচার করানো হবে। ফলে আগামী মে মাস পর্যন্ত তাকে সাইডলাইনেই কাটাতে হবে। নেইমারের পিতার অনুমানও যদি সঠিক হয় তাহলেও আগামী এপ্রিলের শেষ ভাগে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমি-ফাইনালের আগে মাঠে ফিরতে পারবেন না নেইমার।
যদি রিয়ালের বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগে নেইমারকে মাঠে নামানের চেষ্টা করা হয়, তাহলে বিশেষজ্ঞদের মতে সেটি হবে পিএসজির জন্য বিশাল ঝুঁকি। এতে করে আসন্ন রাশিয়া বিশ্বকাপেও নেইমারের অংশগ্রহণের সুযোগ হুমকির মুখে পড়বে। আগামী জুন ও জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপ ফুটবল।
ফরাসি জাতীয় দলের সাবেক চিকিৎসক জিন মার্সেল ফেরেট বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এটি হবে বিশাল ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। তখন চিড় ধরা হাঁড়কে আর রক্ষা করা যাবে না।’
গত আগস্টে ২২২ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে যোগ দেয়ার পর নেইমার ফরাসি ক্লাবের হয়ে ৩০টি ম্যাচে অংশ নিয়ে গোল করেছেন ২৮টি।