সেনাবাহিনীর নির্যাতন মুখে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জীবন এখন চলছে কোনোমতে। এই পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে এমন মানুষও রয়েছেন দেশে যার ৩০ বিঘা জমি আছে। আর কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার টেংখালি ক্যাম্পে যার জীবন কাটছে পলিথিনের শেড দেয়া ঘরে।
মিয়ানমারে ৩০ বিঘা জমি, বাড়ি-ঘর, নাম-ডাক সব ফেলে জীবন বাঁচাতে শূন্য হাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ব্যক্তিটির নাম জাফর ইসলাম। জাফর মিয়ানমারের কুমারখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তাকে এক নামে চিনত আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ।
জাফর তার স্ত্রী হাসিনা বেগম এবং ছয় সন্তান নিয়ে টেংখালি ক্যাম্পে রয়েছেন ছয় মাস ধরে।
মিয়ানমারে তাদের জমিতে কাজ করতেন অনেক কৃষক। অনেকের খাবারের ব্যবস্থাও করতেন তারা। আর তিন বেলা খাবারের যোগাড় কিভাবে হবে সেটাই অনিশ্চিত।
তাদের নিয়ে সম্প্রতি একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি বাংলা। সেখাসে উঠে এসেছে তাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার রাতের কাহিনী। হাসিন বলেন, ‘এক কাপড়ে রাতের অন্ধকারে নৌকায় করে পালিয়ে এসেছি। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা সব বন্ধ। কবে আবার পড়াশোনা শুরু করতে পারবে তার কোনো ঠিক নেই।’
আর জাফর বলছেন, এভাবে জীবন যাপন করা তার জন্য অসম্মানের। শুধু সন্তান আর পরিবারের কথা চিন্তা করে পালিয়ে এসেছেন তিনি।
‘যখন আসি, তখন এক মাস চলার মতো অর্থ আমার হাতে ছিল। কিন্তু আট জনের খরচ চালাতে কিছু দিনের মধ্যেই সেই অর্থ শেষ হয়ে যায়। এখন দিন চলছে বিভিন্ন সংস্থা আর মানুষের সাহায্যে, যেটা আমি কোনো দিন কল্পনা করিনি।’
এই ক্যাম্পে বসেই জাফর জানতে পেরেছেন তার জমি মিয়ানমারের সেনারা দখল করে কারখানা বানানোর কাজ করছে।
মিয়ানমার ফিরে যেতে চান কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তার উত্তর- ‘ইচ্ছা আছে। কিন্তু ফিরে যাবো কোন ভরসায়?’
সূত্র: বিবিসি বাংলা।