আগে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল পরে জামিন আবেদন

আগে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল পরে জামিন আবেদন

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আজই (২০ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার) আপিল করবেন তার আইনজীবীরা। আদালত আপিল আবেদন গ্রহণ করার পর খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে আবেদন করা হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের প্রত্যয়িত অনুলিপি পেয়েছেন আইনজীবীরা। এরপরই এ আপিল আবেদনের প্রস্তুতি নিয়েছেন।

জানা গেছে, আপিল আবেদন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হতে পারে।

সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন জানান, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা ও পরবর্তী আইনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য সিনিয়র আইনজীবীদের নেতৃত্বাধীন একটি আইনজীবী প্যানেল এক দফা বৈঠক করেছেন। এছাড়া বেলা সাড়ে ১২টার পর আবারও দ্বিতীয় দফা বৈঠক করা হবে। বৈঠক শেষে আপিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরও জানান, আপিলের প্রধান গ্রাউন্ড হতে পারে- রাজনৈতিক উদ্দেশে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। সকাল ১০টার দিকে আমরা বৈঠকে বসেছিলাম। এখন দুপুরের দিকে আবারও বসে আপিল ফাইল করা হবে।

আজ (মঙ্গলবার) সকাল ১০টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির (বার) ভবনের তৃতীয় তলার কনফারেন্স কক্ষে এ বৈঠকে ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার এমএম মাহবুবউদ্দিন খোকন, আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল ও সানাউল্লাহ মিয়াসহ খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন জাগো নিউজকে জানান, প্রথম দফার বৈঠক শেষ হয়েছে। দুপুরে আরেক দফা বৈঠক করা হবে। আজই (মঙ্গলবার) হাইকোর্টের সেকশনে খালেদা জিয়ার আপিল আবেদন করা হবে।

খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন হাইকোর্টের কোন বেঞ্চে করা হবে এ বিষয়ে জরুরি আলোচনার জন্য বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। গ্রাউন্ড কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে জয়নুল আবেদীন বলেন, রায়টি ঐতিহাসিক, তাই আমরা পর্যালোচনা করছি। এখনই সব বলা যাচ্ছে না।

এদিকে আজকের (মঙ্গলবার) মধ্যে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে উপস্থাপনের জন্য পুরোদমে আপিল করার প্রস্তুতির কাজ করছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের সদস্যরা। আপিল আবেদনের ফটোকপি, হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন এবং যে কোর্টে শুনানি হবে তা নির্ধারণ করতে পারলে আজকেই (মঙ্গলবার) আইনজীবীরা আপিল আবেদন আদালতে উপস্থাপন করতে পারবেন। অন্যথায় আগামী বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে বলে মনে করছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার একে এম এহসানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এখন আমাদের পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে। জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরাই সিদ্ধান্ত নেবেন কখন কী করবেন। তবে আজই (মঙ্গলবার) আপিল ফাইল করা হবে। সেটা ২টার পর বা বিকেল নাগাতও হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আজ (মঙ্গলবার) আপিল করার পর প্রথমেই হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য নিয়ে যাওয়া হতে পারে।

হাইকোর্টে দুদকের মোট ৬টি বেঞ্চ রয়েছে। তার মধ্যে তিনটি একক বেঞ্চ এবং তিনটি দ্বৈত বেঞ্চ। এর মধ্যে দ্বৈত বেঞ্চেই খালেদার আইনজীবীরা যাবেন বলে বলা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে বিশেষ জজ ৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছর কারাদণ্ডের রায় দেন। একইসঙ্গে দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। সাজা ঘোষণার পর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

আইন আদালত