প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবার আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক

প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবার আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক

প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় সভা ডেকেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সভায় তিনজন মন্ত্রীসহ সাতজন সচিবকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দাসহ এ কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১৮টি সংস্থার প্রধানদের সভায় উপস্থিত থাকতে চিঠি দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমন্বয় সভাটি হবে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) চৌধুরী মুফাদ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘পাবলিক পরীক্ষা আয়োজনের সঙ্গে একাধিক মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ততা রয়েছে। বোর্ড থেকে প্রশ্ন তৈরি করে বিজি প্রেসে ছাপাতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ফাঁস হলে তার দায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের। কারণ বিজি প্রেস জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন। বিজি প্রেস থেকে প্রশ্ন ছাপিয়ে ট্রেজারিতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ফাঁস হলে এর দায় মাঠ প্রশাসনের। অর্থাৎ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে তা ঠেকানোর দায়িত্ব আইসিটি মন্ত্রণালয়ের।’

তিনি আরও বলেন, ‘আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সমন্বয় ছাড়া প্রশ্নফাঁস ঠেকানো সম্ভব নয়। আগামী পরীক্ষাগুলো সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতেই এই সভা ডাকা হয়েছে।’

গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ধারবাহিকভাবে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। সঙ্গে উত্তরপত্রও। শিক্ষা মন্ত্রণালয় পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণাসহ নানা উদ্যোগ নিলেও প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো যায়নি। বরং পরীক্ষা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। সর্বশেষ সোমবারের পরীক্ষায়ও প্রশ্ন ফাঁস হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত ‘প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য যাছাই-বাছাই’ কমিটিও প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পেয়েছে। আগামী ২ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়েও চরম আতঙ্কে রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ অবস্থায় প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানোর কৌশল বের করতেই সভাটি ডাকা হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিব জানান, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সভায় সভাপতিত্ব করবেন। সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজাদুজ্জামান খান কামাল, ডাক এবং টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, জনপ্রশাসন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজিপি, র‌্যাবের মহাপরিচালক, ডিজিএফআই মহাপরিচালক, এনএসআই মহাপরিচালক, বিজি প্রেসের মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, বিটিআরসি চেয়ারম্যানসহ ১৮ সংস্থার প্রধানদের সভায় উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারের যেসব মন্ত্রী, সচিব ও সংস্থার প্রধানদের ডাকা হয়েছে তারা কোনো না কোনোভাবে প্রশ্ন প্রণয়ন, মুদ্রণ ও বিতরণ এবং পরীক্ষার সঙ্গে জড়িত। বৈঠকে প্রশ্নফাঁস ছাড়া কীভাবে পাবলিক পরীক্ষা আয়োজন করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হবে। একটি কৌশলপত্রও চূড়ান্ত হবে। পাশাপাশি চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিষয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বাংলাদেশ