বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ডিসি-১০ উড়োজাহাজ মেরামতের নামে চার মাস ধরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গারে পড়ে আছে। মূলত ইঞ্জিন না থাকায় উড়োজাহাজটি সচল করা যাচ্ছে না। আর রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের আর্থিক সংকটের কারণে বিমান ইঞ্জিনও আনতে পারছে না।
উড়োজাহাজটি বসে থাকায় বিমানের ফ্লাইট শিডিউল যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে, তেমনি এ কারণে এয়ারলাইন্সকে আর্থিক লোকসান গুনতে হচ্ছে। বিমান সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
উড়োজাহাজটি কবে উড্ডয়ন উপযোগী হবে তাও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। অবশ্য বিমানের প্রধান প্রকৌশলী দেবব্রত বণিক মাস দেড়কের মধ্যে উড়োজাহাজটি মেরামত করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন। তবে সংশ্লিষ্ট একাধিক প্রকৌশলী বলছেন ওই সময়ের মধ্যে এটি মেরামত করা সম্ভব হবে না।
সূত্র জানায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজের বহরের মধ্যে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হচ্ছে ডিসি-১০। এক সময় বিমানের বহরে ছয়টি ডিসি-১০ উড়োজাহাজ ছিল। আর এখন বিমানের বহরে ডিসি-১০ রয়েছে মাত্র তিনটি। এর মধ্যে আবার সচল রয়েছে দুটি উড়োজাহাজ।
ডিসি-১০ এসিপি উড়োজাহাজটির মেরামত কাজ শুরু হয় ফেব্রুয়ারির প্রথম থেকে। এর আগে থেকেই উড়োজাহাজটি হ্যাঙ্গারে এনে বসিয়ে রাখা হয়।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, অচল উড়োজাহাজটির ইঞ্জিন খুলে দুটি উড়োজাহাজ সচল রাখা হয়েছে। আর মেরামতের জন্য পাঠানো ইঞ্জিন ঠিক হয়ে গেলেও অর্থের অভাবে বিমান তা আনতে পারছে না। কারণ ইঞ্জিন মেরামত প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে বিমানের দেনা দেড় হাজার কোটির টাকা ছাড়িয়ে গেছে। পাওনা অর্থ পরিশোধ না করা পর্যন্ত কোনো ইঞ্জিন দেবে না মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় অর্থাভাবে ডিসি-১০ উড়োজাহাজটি মাসের পর মাস হ্যাঙ্গারে পড়ে।
এ বিষয়ে বিমানের প্রকৌশল শাখার একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ডিসি-১০-এর ডি-চেক (বড় ধরনের মেরামত) চলছে। অন্যান্য উড়োজাহাজে ডি-চেকের জন্য দুই মাস সময় লাগলেও ৩০ বছরের পুরনো হওয়ায় ডিসি-১০ মেরামতে সময় বেশি লাগছে।
তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে বিমানের প্রকৌশলীরা মেরামতের কাজ করছেন। এই কাজ সম্পন্ন হলেও কোনো লাভ হবে না, যদি না সময় ইঞ্জিনগুলো না পাওয়া যায়। অর্থ সংকটের কারণেই ইঞ্জিনগুলো আনা যাচ্ছে না। আর এই ইঞ্জিন আনতে না পারার দায় প্রকৌশল বিভাগের নয়, এটি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।
সূত্র জানায়, বর্তমানে উড়োজাহাজটির অবকাঠামোর বড় ধরনের মেরামত কাজ চলছে। এছাড়া এর চারটি ল্যান্ডিং গিয়ার পরিবর্তন করতে। সব মিলিয়ে আরও দুই মাস সময় লাগবে।
বিমানের প্রধান প্রকৌশলী দেবব্রত বণিক বলেন, এর মেরামতের কাজ চলছে। মাস দেড়েকের মধ্যে এটি উড্ডয়ন উপযোগী করা সম্ভব হবে।