নতুন ব্যাংকের জন্য সর্বমোট ৩২টি আবেদন জমা পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। এর মধ্যে শেষ দিনে বুধবারই জমা পড়ে ২৪টি আবেদন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আবেদন জমা পড়ে মাত্র আটটি। যার ৫ টিই জমা পড়ে মঙ্গলবার। এর আগে গত ২৩ নভেম্বরই প্রথম দুটি আবেদন জমা পড়ে। এর আগে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত কোন আবেদন জমা পড়েনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে বুধবার আবেদনের সময়সীমা শেষ হয়ে গেলো।
আবেদনগুলো সিলগালা বাক্সে জমা পড়েছে। এগুলো আগামীকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হবে। পরে তিন স্তরে এগুলো যাচাই বাছাই করে যোগ্যদের নির্বাচন করা হবে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ব্যাংকের জন্য আগ্রহী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে যথাযথ প্রক্রিয়া ও শর্ত সাপেক্ষে আবেদন আহ্বান করা হয়ে। এতে আগ্রহীদের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অফেরতযোগ্য ১০ লাখ টাকার জামানতসহ আবেদন করতে বলা হয়।
সূত্র জানায়, জমাকৃত আবেদনগুলো প্রাথমিক যাচাই বাছাই করে আর্থিক এবং কারিগরি মূল্যায়ণ করা হবে। সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করে তা বোর্ডে যাবে। বোর্ডই তালিকা চূড়ান্ত করবে। আর পুরো প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আগামীকাল জমাকৃত পে অর্ডারগুলো সংগ্রহের জন্য পাঠানো হবে এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে আবেদনগুলো খোলা হবে।
এদিকে কোন ঋণ খেলাপী ব্যক্তি যাতে আবেদন করতে না পারে এমন শর্ত রাখা হয় আবেদনের যোগ্যতায়। চারশ কোটি টাকার মূলধন, একজন উদ্যোক্তা সর্বোচ্চ মোট মূলধনের ১০ শতাংশ শেয়ার অধিকারি, বিগত ৫ বছরে খেলাপি থাকলে বা এ বিষয়ক কোনো মামলা আদালতে অনিষ্পত্তি থাকলে তার আবেদন বিবেচনায় না নেওয়া, পরিচালনা পর্ষদে সর্বাধিক ১৩ সদস্য, উদ্যোক্তার আয়কর বিবরণীতে প্রদর্শিত নিট সম্পদ থেকে ব্যাংকের মূলধন সরবরাহ, উদ্যোক্তা বা পরিচালকের সততা ও যোগ্যতা যাচাইসহ আরো বেশি কিছু কঠিন শর্ত বেধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক বোর্ড।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের আগে সরকার নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে লিখিতভাবে জানায়। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে জানিয়ে দেয়, বর্তমান অর্থনীতির আকারে আর কোন নতুন ব্যাংকের প্রয়োজন নেই। এ অবস্থায় নতুন ব্যাংক দিলে তা ব্যাংকগুলোকে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নিয়ে যাবে।
নতুন ব্যাংক দেওয়ার বিরোধীতা করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সহ দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরাও।
এ নিয়ে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের জানান, নতুন ব্যাংক দেওয়া হবে রাজনৈতিক সিন্ধান্তের কারণে। পরে নমনীয় হয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ ১৬ সেপ্টেম্বর বোর্ড সভায় নতুন ব্যাংক দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। তবে কয়টি ব্যাংককে অনুমোদন দেওয়া হবে তা তখন স্পষ্ট করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রস্তাবিত কয়েকটি ব্যাংকের নাম হলো- ফেডারেল ব্যাংক লিমিটেড, পিয়ারলেস ব্যাংক লিমিটেড, মডার্ন ইসলামি ব্যাংক, চাটার্ড ব্যাংক, গ্লোবাল ব্যাংক, টিএমএসএস ব্যাংক, সাউদার্ন ব্যাংক, ওয়েস্টার্ন ব্যাংক, ইউনির্ভাসাল ব্যংক, মেট্রো ব্যাংক লিমিটেড, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে গালফ বাংলা ব্যাংক, কোরিয়া বাংলা ব্যাংক লিমিটেড ইত্যাদি।