মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন ১৭ দেশের মন্ত্রী

মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন ১৭ দেশের মন্ত্রী

এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সম্মেলন অংশ নিতে মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন ১৭ দেশের মন্ত্রী। সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের শিক্ষা ও শিল্প-সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ‘ইউনেস্কো’- এর যৌথ উদ্যোগে বুধবার থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে কালচারাল ডাইভার্সিটি মিনিস্টারিয়াল ফোরাম অব দ্য এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিয়ন ২০১২’ (সিডিএমএফ) শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন।

এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও বিকাশে আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী মন্ত্রী পর্যায়ের এ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের ৪৩টি দেশকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

রোববার পর্যন্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে ৩২টি দেশ। এসব দেশ থেকে ১৭টি দেশের মন্ত্রী এ সম্মেলনে অংশ নিতে মঙ্গলবার ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন- আফগানিস্তানের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ড. সৈয়দ মাখদুম রাহীন; ভুটানের স্বরাষ্ট্র ও সংষ্কৃতি মন্ত্রী লিওনপো মিনজুর দর্জি; ব্রুনাই দারুস সালামের সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী হাজী আব্দুল্লাহ; ইরানের সংস্কৃতি বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী মোহাম্মদ জাফর মোহাম্মদ জাদেহ্; কাজাখাস্তানের সংস্কৃতি ও তথ্য বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী এ বুরিবায়েভ; কিরিবাতির উপ রাষ্ট্রপতি এবং অভ্যন্তরীণ ও সামাজিক বিষয়ক মন্ত্রী তেইমা ওনোরিও; মালদ্বীপের পর্যটন, শিল্প ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আবুল গাফুর আহমেদ আদিব; মার্শাল আইল্যান্ডের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী উইলবার হাইন; পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সামিনা খালিদ গুর্কি; পালাউয়ের সামাজিক ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ফসটিনা কে রিহুহার মারুগ; পাপুয়া নিউ গিনির শিল্প, সংস্কৃতি ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রী বেঞ্জামিন   পোহিলিপ; সামোয়ার শিক্ষা, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রী মাগেলে মাউলিউ মাগেলে; সলোমন আইল্যান্ডের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রী স্যামুয়েল মানেটোয়ালি; শ্রীলংকার জাতীয় ঐহিত্য বিষয়ক মন্ত্রী ড. জগৎ বালসুরিয়া; টুভালুর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পালেনিকে টেকিনেনে ইসাইয়া এবং ভিয়েতনামের সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও পর্যটন বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী লি কান হাই, কম্বোডিয়ার সংস্কৃতি ও চারুকলা বিষয়ক উপ মন্ত্রী সামারাইং কামসান।

এছাড়া অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে- কম্বোডিয়ার সংস্কৃতি ও চিত্রকলা বিষয়ক সচিব স্যামরায়িং কামসান; চীনের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বিষয়ক বৈদেশিক ব্যুরোর মহাপরিচালক হো জিয়াংহুযা; কুক আইল্যান্ডের সাংস্কৃতিক উন্নয়নের তথ্য ও সংরক্ষণ বিষয়ক ব্যবস্থাপক জর্জ পানিয়ানি; উত্তর কোরিয়ার বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সিন হোং চোল; ফিজির জাতীয় ঐহিত্য, সংস্কৃতি ও শিল্পের পরিচালক পেনি কাভুইলাগি; ইন্দোনেশিয়ার শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অর্ন্তগত সাংস্কৃতিক কূটনৈতিক ও অভ্যন্তরীণ মূলবোধ পরিদপ্তরের পরিচালক ইতি ইন্দ্রিয়াতি; লাওসের তথ্য, সংস্কৃতি ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ঐহিহ্য বিভাগের সহকারী মহাপরিচালক ভিয়েংকিও সুকসাভাদ্দি; মঙ্গোলিয়ার শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান বিষয়ক সচিব দালাইজারগল দরজবাল; মায়ানমারের শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য উ তুন উন; নেপালের ইনট্যানজিবেল হেরিটেজ কালচার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সত্যমোহন জোশি; ফিলিপাইনের ন্যাশনাল কমিশন ফর কালচার এন্ড দ্য আর্টসের চেয়ারম্যান ফিলিপ এম ডি লিয়ন; থাইল্যান্ডের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা সাবিত্রী সুয়ানসাথিত্; তিমুরলিস্তের সংস্কৃতি সচিবালয়ের কালচারাল হেরিটেজ ম্যানেজমেন্টের উপদেষ্টা নুনো ভাস্কো ডি সিলভা মিরান্ডা ডে ওলিভিয়েরা; টোঙ্গার ইনট্যানজিবেল কালাচারাল হেরিটেজের সিনিয়র শিক্ষা কর্মকর্তা তুইলোকামানা টুইটা এবং ভানুয়াতুর কালচারাল সেন্টারের পরিচালক এবিওএনজি মারর্সেলিন নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব প্রদান করবেন।

এছাড়াও, ইউনেস্কোর মহাপরিচালক মিজ ইরিনা বোকোভোর নেতৃত্বে ইউনেস্কোর ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ সম্মেলনে অংশ নেবেন।

বুধবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন। জানা গেছে, অনুষ্ঠানে ইউনেস্কোর মহাপরিচালক মিজ ইরিনা বোকোভা উপস্থিত থাকবেন।

এ সম্মেলনে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও বিকাশের ওপর ৬টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এসব সেমিনার ঢাকার শাহাবাগের হোটেল রূপসী বাংলায় অনুষ্ঠিত হবে। ১১ মে ২০১২, শুক্রবার ‘ঢাকা ঘোষণা’-এর মধ্য দিয়ে এ সম্মেলন শেষ হবে।

সম্মেলন চলাকালীন হোটেল রূপসী বাংলায় বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের ওপর একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। এছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে দেশবরেণ্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।

উল্লেখ্য, বিশ্বের সব জাতির সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও বিকাশ নিশ্চিতকরণের লক্ষে ইউনেস্কো ২০০৫ সালে ÔConvention on the Protection and Promotion of the Diversity of Cultural Expressions, 2005’ শীর্ষক কনভেনশনটি গ্রহণ করে।

বাংলাদেশ ২০০৭ সালে কনভেনশনটি অনুস্বাক্ষর করে। এ যাবত বিশ্বের ১২৩টি দেশ এ কনভেনশনটি অনুস্বাক্ষর করেছে।

এ কনভেনশনে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশসমূহের অনুস্বাক্ষরের হার কম। বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের ৪৪টি দেশের মধ্যে মাত্র ১২টি দেশ কনভেনশনটিতে অনুস্বাক্ষর করেছে।

কনভেনশনে প্রথম দিকে অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ কনভেনশনটিতে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্য দেশসমূহকে অনুস্বাক্ষরে উৎসাহিত করার লক্ষে এ সম্মেলনের আয়োজন করছে।

অন্যান্য