আরব সাগরে ওসামা বিন লাদেনের মরদেহের সন্ধান পাওয়া গেছে। ভারতের গুজরাট রাজ্যের সুরাত থেকে ৩২০ কিলোমিটার পশ্চিমে গভীর সমুদ্রের তলদেশে ব্যাগেভর্তি মরদেহটি পড়ে রয়েছে। এ দাবি করেছেন মার্কিন গুপ্তধন অনুসন্ধানকারী বিল ওয়ারেন। আর আগামী ১ জুনেই উদ্ধার অভিযান শুরু করবেন বলে আশা করছেন তিনি।
স্প্যানিশ পত্রিকা এল মুন্দোকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি দাবি করেছেন, ‘তারা (মার্কিন বাহিনী) তাকে যেখানে ফেলে দিয়েছে সে স্থানটি আমি চিহ্নিত করতে পেরেছি। আর এ তথ্য একমাত্র আমার কাছেই আছে।’
বিন লাদেনকে সাগরে সমাহিত করার কিছু স্থিরচিত্র সম্প্রতি প্রকাশ করেছে মার্কিন নেভি। আর এসব পরীক্ষা-নীরিক্ষা করেই বিন লাদেনের তথাকথিত কফিনের অবস্থান পুঙ্খাপুঙ্খভাবে চিহ্নিত করতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন ওয়ারেন। এ কফিন সাগর থেকে তোলার জন্য দুই লাখ ডলার অর্থ সহায়তা চেয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে ওয়ারেন বলেছেন, ‘আমরা এটা করব কারণ আমরা দেশপ্রেমিক আমেরিকান। আর আমারা মনে করি, এ ব্যাপারে যথেষ্ট প্রমাণ উপস্থাপনে প্রেসিডেন্ট ওবামা ব্যর্থ হয়েছেন।’
তিনি জানান, সেই মরদেহ উদ্ধারে এক সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। আর ১ জুন থেকেই তিনি অভিযান শুরু করতে চান।
ওয়ারেনের এ দাবিকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ দীর্ঘ দিনের ক্যারিয়ারে তিনি সাগরে যুবে যাওয়া ২শ’র বেশি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করেছেন। অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ এ অনুসন্ধাকারীর কোনো সন্দেহ নেই, বিন লাদেনের মৃতদেহ ব্যাগে করে যেখানে ফেলা হয়েছে এখনো ঠিক সেখানেই রয়েছে। কারণ ওতে অতিরিক্ত ওজন দেওয়া হয়েছিল।
বিন লাদেন নিহতের ব্যাপারে মার্কিন কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যে কোনো আস্থা নেই ওয়ারেনের। একারণেই আসল ঘটনা জানতে গত বছরের জুন থেকে অনুসন্ধান শুরু করেছেন তিনি।
আর অনুসন্ধানের জন্য রাশিয়ার কাছে গভীর সমুদ্র ডুবুরির জন্য প্রয়োজনী সরঞ্জাম ভাড়া করার অর্থ জোগার করতে তিনি আজারবাইজানে ডুবে যাওয়া জাহাজ অনুসন্ধানের কাজে চুক্তিবদ্ধ হন।
এ অভিযানের ব্যাপারে তাকে যথেষ্ট গোপনীয়তা এবং সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়েছে বলে জানান ওয়ারেন। জানতে পারলে যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাকে মেরে ফেলতে পারে বা ব্যবহৃত নৌকা মাঝ সমুদ্রে ডুবিয়ে দেওয়ার ভয় ছিল তার।
তবে কোনো সমস্যা ছাড়াই সফলভাবে অভিযান শেষ করতে পেরেছেন তিনি। বিন লাদেনের ‘মরদেহের’ সেই ব্যাগটির অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পেরেছেন তিনি।
কিন্তু আগামী জুনের অভিযানে সেই ব্যাগটি সাগরপৃষ্ঠে তুলে না এনে তার কিছু ছবি এবং ভিডিও চিত্র নেবেন বলে জানিয়েছেন বিল ওয়ারেন। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য তার কিছু অংশও নিয়ে আসার কথা বলেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের একটি কম্পাউন্ডে মার্কিন মেরিনের বিশেষ বাহিনী সিল অভিযান চালিয়ে হত্যা করে আল কায়েদা নেতা ওসামা বিল লাদেনকে।
এর পর তার মরদেহ সাগরে সমাহিত করা হয় বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ। আর এ অভিযানের বা মৃত বিন লাদেনের কোনো ছবিও প্রকাশ করেনি তারা।