বিশ্ববিখ্যাত কোমল পানীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কোকাকোলা চীনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। সম্প্রতি চীনে বাজারজাত করা কোকাকোলার বোতলে অত্যধিক মাত্রায় ক্লোরিন থাকার অভিযোগ পায় চীনা কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে কোকাকোলার বেশ কিছু বোতলে অত্যধিক ক্লোরিনের অস্তিত্ব খুঁজে পায়। এর প্রেক্ষিতে চীনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে কোকাকোলা কর্তৃপক্ষ ।
কোকাকোলা কোম্পানির চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া শাখার প্রেসিডেন্ট ডেভিড জি ব্রুকস বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে এরকম একটি অভিযোগের পর আমরা যেহেতু সময়মত জবাব দেইনি, তাই ক্ষমা চাওয়াটা আমাদের জন্য জরুরি ছিল।’
এ দিকে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরপরই চীনের সানঝি প্রদেশে অবস্থিত প্লান্টের উৎপাদন ২৮ এপ্রিল থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর আগে প্রাদেশিক খাদ্য-নিরাপত্তা পরিদর্শন কর্তৃপক্ষ প্লান্টটিতে উৎপাদিত পানীয়তে ক্লোরিন প্রাপ্তির বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
প্লান্টটিতে ফেব্রুয়ারির ৪ থেকে ৮ তারিখের মধ্যে উৎপাদিত কোকাকোলার পানিতে অস্বাভাবিক মাত্রার ক্লোরিন পাওয়া গেছে। এই সময়ের মধ্যে উৎপাদিত পানীয়ের ১২ লাখ বাক্সের মধ্যে ৭৬ হাজার ৩ শ ৩৯টি বাক্স ইতিমধ্যে সানাঝি প্রদেশের বাজারে সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
তবে এই ঘটনায় ক্ষমা প্রার্থনা করলেও ব্রুকস বলেন, ‘কোকাকোলার ১২৬ বছরের ইতিহাসে এখন সবচেয়ে ভাল সময়। পানীয়তে ক্লোরিন প্রাপ্তি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ ঘটনায় কোকাকোলার সুনাম ও ব্যবসার কোনো ক্ষতি হবে না।’
গ্রাহক ও বিক্রেতাদের কেউ দূষিত কোকাকোলা পাল্টে নিতে চাইলে বা টাকা ফেরত চাইলে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেছেন ব্রুকস।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদপত্র চায়না ডেইলি ব্রুকসের বরাত দিয়ে জানায়, সংগৃহীত পানীয় সানঝি ব্যুরো অব কোয়ালিটি সুপারভিশন অ্যান্ড ইন্সপেকশনের তত্ত্বাবধানে নষ্ট করে ফেলা হবে।
তবে এখনও কোকাকোলা গ্রাহকদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ উল্লেখ করে কোকাকোলা কর্র্তৃপক্ষ বলেছে, ‘একজন গ্রাহককে পুরনো কোকাকোলা পাল্টে নতুন পানীয় দেওয়ার অর্থ হচ্ছে গ্রাহকদের আস্থা বজায় রাখা।’
তবে এ ব্যাপারে কর্তব্যে অবহেলার কারণে প্লান্টটির জেনারেল ম্যানেজারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ব্রুকস বলেন, ‘কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজারকে অপসারণ করে সেখানে যোগ্য কাউকে নিয়োগ দেওয়া হবে। খুব শিগগীরই সানঝির খাদ্য-নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের পর আমরা আবার উৎপাদনে যাব।’