বাংলাদেশের সঙ্গে তুলা আমদানি সংক্রান্ত একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে ভারত। সম্প্রতি ভারতের প্রভাশালী ইংরেজি দৈনিক “টাইমস অব ইন্ডিয়া“য় দেশটির ঊর্ধ্বতন কমকর্তাদের বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, খুব শিগগিরই দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা রপ্তানিযোগ্য তুলার পরিমাণ ও মূল্য নির্ধারণ করতে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।
প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশে ন্যূনতম ১৫ লাখ বেল সুতা রফতানির নিশ্চয়তা চেয়েছে। তবে ভারত সরকার এ ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি বলে জানিয়েছে পত্রিকাটি। নিজেদের অভ্যন্তরীণ চাহিদার কথা মাথায় রেখে তবেই ভারত বাংলাদেশে তুলা রপ্তানির পরিমাণ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে কোটা ও শুল্কমুক্তভাবে গার্মেন্টপণ্য আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে তুলনামূলক উদার আচরণের মাধ্যমে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর কৌশলের অংশ হিসেবেই ভারত সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছে পত্রিকাটি।
সম্প্রতি বাংলাদেশের বাণিজ্যসচিব গোলাম হোসেনের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল গত মার্চের শেষে ভারত সফর করে দেশটি থেকে তুলা আমদানির ব্যাপারে ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা করেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
তবে টাইমস অব ইন্ডিয়ার ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতের তুলা রপ্তানি-নীতিতে ঘন ঘন পরিবর্তন আসায় বাংলাদেশ তার অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। পত্রিকাটি আরও জানায়, উন্নত মান ও তুলনামূলক কম দামের কারণে ভারতীয় তুলার ওপর বাংলাদেশ অনেকটাই নির্ভরশীল।
সম্প্রতি তুলা রপ্তানির ওপর আরোপিত ভারতীয় নিষেধাজ্ঞারও সমালোচনা করেছে বাংলাদেশ। পত্রিকাটি জানায়, ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বের তুলার বাজারে অস্থিতিশীলতা দেয়। এর বিরূপ প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্পে।
তবে প্রতিবেদনে জানানো হয়, উভয় দেশই পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের খাতিরে বাংলাদেশে বাৎসরিক তুলা রপ্তানির ন্যূনতম পরিমাণ নির্ধারণে সম্মত হয়েছে। তবে এজন্য ভারত বাংলাদেশের কাছে রফতানি-মূল্যের বিপরীতে জামানত দাবি করেছে বলে জানিয়েছে পত্রিকাটি।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে ভারত তুলা রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও সম্প্রতি আবারও নতুন করে রপ্তানির অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে। গত মার্চের প্রথম সপ্তাহে অভ্যন্তরীণ বাজারে তুলার সঙ্কটের অজুহাত তুলা রপ্তানির ওপর সাময়িকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত। তিন সপ্তাহ এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকার পর নিজে দেশেই ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার পর অবশেষে ভারত সরকার সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করতে যাচ্ছে বলে ঘোষণা দেয়।