উড়তে থাকা ভারতকে যেন মুহূর্তের মধ্যেই মাটিতে নামিয়ে আনল শ্রীলঙ্কা। বিরাট কোহলির অনুপস্থিতিতে অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এই রোহিত শর্মার ব্যাটেই ২৬৪ রানের ইনিংস দেখেছিল ওয়ানডে ক্রিকেট। সেই রোহিতের নেতৃত্বেই লজ্জার রেকর্ড উপহার দিল ভারত। ধর্মশালায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১১২ রানেই অলআউট হয়েছে রোহিত অ্যান্ড কোং।
৬ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৮৭ বল খেলে মহেন্দ্র সিং ধোনি যদি একাই ৬৫ রান না করতেন, তাহলে ঘরের মাঠে সর্বনিম্ন রানের লজ্জাতেই পড়তে হতো ভারতকে। তবুও ঘরের মাঠে লজ্জার রেকর্ডের স্বাক্ষী হতে হলো ভারতকে। সাম্প্রতিক সময়ে ঘরের মাঠে এত কম রানে অলআউট হয়নি ভারত। এ নিয়ে ঘরের মাঠে এটা তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর ভারতের। ১৯৮৬ সালে কানপুরে শ্রীলঙ্কার কাছেই ৭৮ রানে অলআউট হতে হয়েছিল ভারতীয়দের। এরপর ১৯৯৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে আহমেদাবাদে অলআউট হয়েছিল ১০০ রানে। ১৯৮৭ সালে গুয়াহাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছেই অলআউট হয়েছিল ১৩৫ রানে এবং একই স্কোর তারা করেছিল ১৯৯৯ সালে জয়পুরে, পাকিস্তানের বিপক্ষে।
আরও একটি মজার তথ্য হলো, ইনিংসের প্রথম ৫ ওভার শেষে ভারতের ছিল ২ উইকেটে ২ রান। ২০০১ সালের পর ওয়ানডে ক্রিকেটে আর কোনো দলের এতটা করুণ বিপর্যয় ঘটেনি। ভারত খেলেছিল ৩৮.২ ওভার। এর মধ্যে ১৩টিই ছিল মেডেন। ভারতের জন্য ওয়ানডে ইতিহাসে এত বেশি মেডেন হজম করার রেকর্ড আর কখনও ঘটেনি।
এর আগে তারা দু’বার ১২টি করে মেডেন হজম করেছিল একবার ১৯৭৫ বিশ্বকাপে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এবং ১৯৮১ সালে অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এমনকি গত ১০ বছর ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে আর কোনো দলও এতগুলো মেডেন হজম করেনি।
মহেন্দ্র সিং ধোনি একাই পুরো ইনিংসের ৫৮.০৩ ভাগ রান করেছেন। ভারতের হয়ে ওয়ানডে ইতিহাসে কোনো এক দলীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত অবদানের ক্ষেত্রে এটা চতুর্থ অবস্থানে। ধোনির ৮৭ বলে ৬৫ রানের মধ্যে ছিল ১০টি বাউন্ডারি এবং ২টি ছক্কার মার। ভারতীয় ইনিংসে ধোনি ছাড়াও দুই অংকের ছোঁয়া পান হার্দিক পান্ডিয়া (১০) এবং কুলদীপ যাদব (১৯)।
এছাড়া বাকি ব্যাটসম্যানরা ২ অংকের ছোঁয়াই পাননি। চারজন ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন গোল্ডেন ডাক মেরে। ভারতের ওয়ানডে ইতিহাসে এ ঘটনা আরও একবার আছে। ২০১১ বিশ্বকাপে নাগপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চারজন ব্যাটসম্যান গোল্ডেন ডাক মেরেছিলেন। একই সঙ্গে ২০১৩ সালের পর থেকে ৬৩ ইনিংস পর গোল্ডেন ডাক মারলেন শিখর ধাওয়ান। বাকি তিনজন দিনেশ কার্তিক, ভুবনেশ্বর কুমার এবং জসপ্রিত বুমরাহ।
দিনেশ কার্তিক তো বলতে গেলে রেকর্ডই গড়ে ফেললেন। তিনি আউট গয়েছেন গোল্ডেন ডাক-এর শিকার হয়ে। অথ্যাৎ স্কোরবোর্ডে তার নামের পাশে একটিও রান নেই। আউট হওয়ার আগে বল খেলেছেন ১৮টি। ভারতের ওয়ানডে ইতিহাসে এমন ঘটনা আর নেই। সবচেয়ে বেশি বল খেলে কোনো রান করতে না পেরে আউট হওয়ার রেকর্ড এখন দিনেশ কার্তিকের। ১৯৭৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একনাথ সোলকার সর্বোচ্চ ১৭ বল খেলে কোনো রান না করে আউট হয়েছিলেন। সেই লজ্জা থেকে অবশেষে মুক্তি মিললো একনাথের। লঙ্কানদের বিপক্ষে এই ম্যাচেই জসপ্রিত বুমরাহ ১৫ বল খেলে কোনো রান না করেই আউট হয়েছেন।