মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের হত্যা, নির্যাতনের প্রতিবাদ ও মানবাধিকার রক্ষার দাবি জানিয়েছে নাগরিক সমাজ। বুধবার জাতীয় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, বিগত কয়েক সপ্তাহে মিয়ানমার সরকার সেনাবাহিনী ও পুলিশী নির্যাতন ও অমানবিক বর্বরতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষরা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। তাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আমরা বাংলাদেশের সচেতন নাগরিকবৃন্দ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত শাসকগোষ্ঠীর প্রতি চরম ধিক্কার জানাই। পাশাপাশি বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে অবিলম্বে মুসলিম-হিন্দু নির্বিশেষে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ওপর এই অমানবিক নিধনযজ্ঞ, হত্যা, উৎপীড়ন বন্ধের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, একই সঙ্গে ভারত, গণচীন, রাশিয়া, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের সকল বৃহৎ ও ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দের কাছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বিরোধী হত্যাযজ্ঞ বন্ধ এবং বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাদের দেশে ফেরত নেবার জন্য কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ ও প্রভাব বিস্তারের আহ্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ৮ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা বাংলাদেশের ওপর যে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত চাপ সৃষ্টি করেছে তা সকলকে সবিস্তারে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি তা মোকাবেলায় এশিয়া ও মধ্যে প্রাচ্যেসহ বিভিন্ন বন্ধুদেশ বাংলাদেশ, ভারত, চীন, রাশিয়া, জাপান, জার্মানী, ইংলেন্ড, ফ্রান্স, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্যান্য দেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল রাষ্ট্র, সরকার ও জনগণের সহযোগিতা এবং সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক ড. অজয় রায়, সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট তবারক হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।