২০১৭ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে শতকরা ৯৯.৬২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। আর এই সাফল্যের জন্য অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা স্বীকার করলেন ভিকারুননিসার ছাত্রীরা।
রোববার ভিকারুননিসার বেইলি রোড শাখার বোর্ডে ফল টাঙানোর পরপরই উৎসবে মেতে ওঠেন ছাত্রীরা। কেউ ভিক্টরির (জয়ী) ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে, কেউ ড্রামের তালে নেচে উৎসব উদযাপন করছিলেন।
এ সময় মেহের নিগার নামে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পাওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘শিক্ষক ও বাবা-মায়ের পরিশ্রমের কারণেই আমার এই ফলাফল। দ্বিতীয় বর্ষে এসে আমি একটি ক্লাসও মিস করিনি। কোনো পরীক্ষা-মডেল টেস্ট বাদ দেইনি। তাই চর্চাটা খুব ভালো হয়েছে। এ প্লাস পেয়ে খুব ভালো লাগছে। এবার টার্গেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়া।’
মৌসুমী আক্তার নামে একই বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পরীক্ষায় ভালো করার জন্য যা যা সাপোর্ট দরকার তার সবই বাবা-মা ও শিক্ষকদের কাছ থেকে পেয়েছি। শিক্ষকরা আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছেন। ইচ্ছা আছে অনার্স করে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করব।’
মৌসুমীর বাবা মো. আলতাফ হোসেন বলেন, ‘যখন আমার মেয়ে এসএসসি পাস করল সেবার প্রশ্নফাঁসের একটা গুঞ্জন ছিল। এতে আমার মেয়ের মতো অনেক শিক্ষার্থী ভেঙে পড়েছিল। তবে এবার সেই ধরনের গুঞ্জন না থাকায় আত্মবিশ্বাস নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। তাই ভালো ফলাফল করতে পেরেছে।’
এইচএসসির ঘোষিত ফলাফলে ভিকারুননিসা কলেজ থেকে মোট এক হাজার ৮শ ২১ জন ছাত্রীর মধ্যে তিনজন বাদে সবাই উত্তীর্ণ হয়েছেন। বিজ্ঞান বিভাগের ওই তিনজন ছাত্রী অনুপস্থিত ছিলেন বলে তারা অকৃতকার্য হন।
এদিকে ভিকারুননিসার ভালো ফলাফলের বিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও অভিভাবকদের ত্রিমুখী প্রচেষ্টায় বরাবরের মতো এবারও আমাদের ছাত্রীরা ভালো ফলাফল করেছে। তিনজন অনুপস্থিতির কারণে কৃতকার্য হতে পারেনি। এই ফলাফলে আমি খুবই সন্তুষ্ট।’
ভিকারুননিসা এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এর আগে, রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবনে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এবার ১০টি বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। কারিগরিতে পাস ৮১.৩৩ শতাংশ, ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬৬.৮৪ শতাংশ এবং মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৭.০২ শতাংশ।
এরপর দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী।