দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া জানিয়েছেন, উত্তরাঞ্চলে পানি কমতে শুরু করলেও মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর ও ভোলা জেলা নতুনভাবে প্লাবিত হতে পারে। এসব এলাকায় বন্যা মোকাবেলায় সরকারের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। প্রতিটি জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এসব জেলার জেলা প্রশাসনের হাতে আমরা খাদ্যসমগ্রী পাঠিয়ে দিয়েছি। যেখান যে পরিমাণ চাল প্রয়োজন হবে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক চাইলেই তা সরবরাহ করা হবে। তারপর ওইসব অঞ্চলে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবক্ষণ করছেন। যদি পরিস্থিতি খারাপের দিকে যায় তাহলে আমরাও ওই সব এলকায় ছুটে যাবো।
এ পর্যন্ত বন্যায় কত পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিদিন এ সংখ্যা বাড়ছে। তাই এখনো সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়নি। এই সংখ্যাটা ৩ লাখও হতে পারে আবার ১২ থেকে ১৫ লাখও হতে পারে। তবে যাই হোক সবাইকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে কাজ করছে সরকার।
মন্ত্রী বলেন, চলতি মাসের ২, ৩ তারিখ থেকে সিলেট, মৌলভীবাজার ও উত্তরাঞ্চলে শুরু হয় আগাম বন্যা। সিলেট ও মৌলভীবাজার সফরের পর গত শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা ৫ দিন আমিসহ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে উত্তরাঞ্চলের জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার বন্যা প্লাবিত এলাকা সফর করেছি। মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনেছি, দেখেছি। ত্রাণ কার্যক্রম সরেজমিনে তদারকি করেছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বানভাসী মানুষের পাশে থেকে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছি। বন্যা প্লাবিত মানুষদের সাহস জুগিয়েছি। বন্যা প্লাবিত মানুষের জন্য এ যাবৎ ১২ হাজার মেট্রিক টন চাল, ৩ কোটি ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। ৫০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার দিয়েছি। প্রত্যেক জেলায় পানি বিশুদ্ধকরণ মোবাইল গাড়ি পাঠিয়েছি। এছাড়াও ৩ হাজার বান্ডিল ঢেউটিন ও ৯ লাখ টাকা দিয়েছি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘরবাড়ি নির্মাণের জন্য।
তিনি বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত মানুষের খাবার, চিকিৎসা ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করেছি। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ইজিপিপি প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্তদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।