পরিবেশ দূষণের বিষয়টি মাথায় রেখে রাস্তাঘাট বা উন্মুক্ত স্থানে কোরবানীর পশু জবাই থেকে বিরত থাকতে সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘পবিত্র ঈদ উল আযহা মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য অনেক বড় ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসবে পশু কোরবানীকরণে পরিবেশ ও পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে।’
তিনি বুধবার স্থানীয় সরকার বিভাগের সভাকক্ষে কোরবানীর পশু জবাই ও বর্জ্য অপসারণে সিটি কর্পোরেশনসমূহের প্রস্তুতি সংক্রান্ত এক সভায় সভাপতির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
সভায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সিলিনা হায়াৎ আইভি, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনিরুল হক, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শরফুদ্দীন আহম্মেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ইকরামুল হকসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, গত বছর কোরবানীর পশু জবাইয়ের জন্য ১১টি সিটি কর্পোরেশন ও ৫৪ টি জেলা সদর পৌরসভায় মোট ৬ হাজার ২৫১টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল। ওই বছর নির্ধারিত এলাকার আওতায় পশু কোরবানীর সংখ্যা ছিল মোট ৭ লাখ ৩৬ হাজার ৩২টি এবং এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানীর কার্যক্রম ৭৩ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়।
এ বছর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে পশুর হাট ১০টি, সম্ভাব্য পশু কোরবানীর সংখ্যা ২ লাখ ২১ হাজার ও পশু জবাইয়ের জন্য ৫৪৯টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে পশুর হাট ১৩টি, সম্ভাব্য পশু কোরবানীর সংখ্যা ২ লাখ ৭৫ হাজার ও পশু জবাইয়ের জন্য ৫৫৫টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে পশুর হাট ১টি, সম্ভাব্য পশু কোরবানীর সংখ্যা ৩০ হাজার ৭শ’টি ও পশু জবাইয়ের জন্য ২১৭টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে পশুর হাট ৮টি, সম্ভাব্য পশু কোরবানীর সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজার ও পশু জবাইয়ের জন্য ৩৬৫টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। খুলনা সিটি কর্পোরেশনে পশুর হাট ১টি, সম্ভাব্য পশু কোরবানীর সংখ্যা ১২ হাজার ও পশু জবাইয়ের জন্য ১৬৮টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে পশুর হাট ৯টি, সম্ভাব্য পশু কোরবানীর সংখ্যা ২০ হাজার ও পশু জবাইয়ের জন্য ১৩৯টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনে পশুর হাট ১টি, সম্ভাব্য পশু কোরবানীর সংখ্যা ১৫ হাজার ও পশু জবাইয়ের জন্য ২৭টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে পশুর হাট ২৩টি, সম্ভাব্য পশু কোরবানীর সংখ্যা ১৫ হাজার ৯১২টি ও পশু জবাইয়ের জন্য ১৮৩টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে পশুর হাট ৪টি, সম্ভাব্য পশু কোরবানীর সংখ্যা ৯ হাজার ও পশু জবাইয়ের জন্য ১৯০টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। রংপুর সিটি কর্পোরেশনে পশুর হাট ৪টি, সম্ভাব্য পশু কোরবানীর সংখ্যা ১ হাজার ৬৫০টি ও পশু জবাইয়ের জন্য ৯৯টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে পশুর হাট ২২টি, সম্ভাব্য পশু কোরবানীর সংখ্যা ২৮ হাজার ৩৯৮টি ও পশু জবাইয়ের জন্য ৫৪৯টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, নির্ধারিত স্থানে পশু জবাই নিশ্চিত করণে জনগণকে উৎসাহিত করতে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ ব্যয় করতে পারে।
তিনি গত বছর কোরবানীর বর্জ্য পরিষ্কারে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সাফল্যের কথা তুলে ধরে বলেন, যদি ৪৮ ঘন্টা সময়ের মধ্যে কোরবানীর বর্জ্য পরিষ্কারের কথা ছিল। সিটি কর্পোরেশনসমূহ ২৪ ঘন্টায় তা সম্পন্ন করেছে।
সভায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক গত বছরের তুলনায় এ বছর আরও বেশি পরিমানে মানুষ নির্ধারিত স্থানে কোরবানীর ব্যাপারে উৎসাহিত হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ধীরে ধীরে এ বিষয়ে নগরবাসী সচেতন হচ্ছে। প্রাকৃতিক কারণে সফলতা গত বছর কম হলেও এ বছর তিনি সফল হবার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইউনিট ২৪ ঘন্টার মধ্যে বর্জ্য নিষ্কাশনে সক্ষম।