পৃথিবী খুব দ্রুতই একটি প্লাস্টিক গ্রহে পরিণত হচ্ছে। মার্কিন বিজ্ঞানীদের এক গবেষণা অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত উৎপাদিত প্লাস্টিকের পরিমাণ ৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন টন। গত ৬৫ বছরেই এই বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক তৈরি হয়েছে। খবর বিবিসির।
এই বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক নিউ ইয়র্কের ২৫ হাজার এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের সমান অথবা ১ বিলিয়ন হাতির ওজনের সমপরিমাণ।
আর এই বিশাল পরিমাণ উৎপাদিত প্লাস্টিকের প্রায় ৭৯ শতাংশই ছড়িয়ে পড়েছে খোলা প্রকৃতিতে। প্লাস্টিক বর্জ্যে দিন দিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ।
প্লাস্টিকের অধিক উৎপাদন এবং প্রকৃতিতে এর দ্রুত ছড়িয়ে পড়া আশংকাজনক হারে বাড়ছে। মাটি এবং পানিকে ভয়াবহভাবে দূষিত করছে প্লাস্টিক। এমনকি নদী এবং সাগরও প্লাস্টিক পণ্যের কারণে দূষিত হচ্ছে। যেহেতু প্লাস্টিক পণ্য পচনশীল নয়, তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, তাপ প্রয়োগ করে এগুলো নিঃশেষ করতে হবে।
এছাড়া প্লাস্টিকের সঠিক প্রয়োজন নিরুপণ করে তারপর উৎপাদনে যাওয়া উচিত। এজন্য সমন্বিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন। প্যাকেজিং বা স্বল্প সময়ের জন্য পণ্য সরবরাহের কাজে প্লাস্টিক বেশি ব্যবহার করা হয়।
ড. রোল্যান্ড গেয়ার নামের এক বিশেষজ্ঞ বিবিসিকে জানান, এই পৃথিবী খুব দ্রুত একটি প্লাস্টিকের গ্রহে পরিণত হবে এবং আমরা যদি এমনটা না চাই তবে ক্ষতিকর পণ্য বিশেষ করে প্লাস্টিকের তৈরি জিনিস ব্যবহারে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার একদল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোলজিস্ট প্লাস্টিকের উৎপাদন, ব্যবহার এবং দূষণ সম্পর্কে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। এতে বলা হয়েছে, প্রায় ৮ হাজার ৩শ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণের অর্ধেক গত ১৩ বছরে উৎপাদিত হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৩০ ভাগ প্লাস্টিক ব্যবহৃত হচ্ছে।
বাতিল প্লাস্টিকের মধ্যে মাত্র ৯ ভাগ পুনর্ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া ১২ শতাংশ প্লাস্টিক পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে আর ৭৯ ভাগ প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১৪ সালে প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহারযোগ্য হার ইউরোপে ৩০ ভাগ, চীনে ২৫ ভাগ এবং যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ৯ ভাগ।