ভারতের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ভোট শুরু হয়েছে। সরাসরি জনগণের ভোটে নয় বরং দেশটিতে ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবে। ইলেক্টোরাল কলেজে ৪ হাজার ৮৯৬ জন সদস্য। এর মধ্যে লোকসভায় ৫৪৩ জন, রাজ্যসভায় ২৩৩ জন এবং স্টেট অ্যাসেম্বলির মোট সদস্য ৪ হাজার ১২০ জন।
লোকসভা এবং রাজ্যসভার সাংসদ এবং বিধানসভার বিধায়করা নির্বাচকমণ্ডলীতে রয়েছেন। বিধানসভার সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন না। কোনো রাজনৈতিক দল কোনো প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশিকা (হুইপ) জারি করতে পারে না। মোট ভোটমূল্যের অর্ধেকের অন্তত একটি ভোট বেশি পেলেই একজন প্রার্থী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হবেন।
এবার দু’জন প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে। এদের মধ্যে একজন বিহারের সাবেক গভর্নর বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের রামনাথ কোবিন্দ। আর অন্যজন লোকসভার সাবেক স্পিকার ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্সের মীরা কুমার।
সংখ্যার হিসেবে বিজেপি ও তাদের শরিক দলগুলোর যা শক্তি, তাতে তারা বিরোধীদের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে। ফলে কোবিন্দ বেশ এগিয়ে এবং তার জয় অনেকটাই নিশ্চিত বলে ধরে নেয়া হচ্ছে।
অনেকেই বলছেন, রামনাথ কোবিন্দকে মনোনয়ন দিয়ে বিজেপি এই বার্তাই দিতে চাচ্ছে যে, ২০১৯ সালে ভারতের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে তারা দলিতদের প্রবলভাবে পাশে চায়। বিশেষ করে উত্তর প্রদেশে গত নির্বাচনে বিজেপি অনেকগুলো আসন জিতেছে সেখান থেকে বিরাট সমর্থন আশা করছে আবারও। সেকারণেই তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
আবার বিরোধী দলগুলোও যখন মীরা কুমারকে তার প্রতিদ্বন্বী হিসেবে নির্বাচন করেছে প্রার্থী করেছে তখন তারাও মনে করেছে, একজন দলিত প্রার্থীকে সমস্ত বিরোধী দল সমর্থন করবে এবং রাজনৈতিক বাধা ততটা দেখা দেবেনা।
এর আগে কে আর নারায়ণ ছিলেন ভারতের প্রথম দলিত রাষ্ট্রপতি। অন্যদিকে এর আগে বিজেপির কোনও সদস্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হননি।
নির্বাচন সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মীরা কুমার বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন একটা আদর্শের লড়াই। তবে আদর্শ তুলে ধরতে তৎপর কোবিন্দও। পশ্চিমবঙ্গে ভোটের জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন মীরা কুমার। তিনি মমতার সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন। মীরা কুমার প্রকাশ্যে মমতার প্রশংসাও করেছেন।
তৃণমূল, কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের বিধায়কদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মীরা বলেন, যদি জিততে পারি তাহলে সমাজে পিছিয়ে পরা মানুষদের জন্য প্রথম কাজ হবে আমার।
পশ্চিমবঙ্গে এনডিএর প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দর বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। তিনি সেখানে ২৩২২টি ভোট পাবেন বলে আশা করছেন। তবে কোবিন্দের তুলনায় দৌঁড়ে মীরা পিছিয়ে থাকলেও এ রাজ্যে অন্তত তার পাল্লাই ভারী। অন্যান্য রাজ্যে এই দুই প্রার্থী সমানতালে প্রচারণা চালিয়েছেন।
ভোট গ্রহণ শেষে আগামী ২০ জুলাই নয়াদিল্লিতে ভোট গণনা হবে। বিভিন্ন রাজ্যের রাজধানী থেকে নয়াদিল্লিতে ব্যালট বাক্স এনে ভোট গণনা করা হবে।
এর আগে ১৩ বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছে ভারত। ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রণব মুখার্জী। তিনি ইউপিএ প্রার্থী ছিলেন। ৭ লাখ ১৩ হাজার ৭৬৩ ভোট পেয়ে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন।