রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার হাবাসপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে আত্মসমর্পণ করেছেন করেছেন সুমাইয়া বেগম (২৫) নামের সন্দেহভাজন এ নারী জঙ্গি। পুলিশের আহ্বানের প্রায় তিন ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
এর আগে সকাল পৌনে ৮টার দিকে ওই আস্তানায় পুলিশ অভিযান চালালে কয়েকজন জঙ্গি বেরিয়ে আত্মঘাতি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে মারা যান তারা। তখন থেকেই বাইরে বসে ছিলেন সুমাইয়া। ধারণা করা হচ্ছিল, অন্যদের মতো তিনিও ‘সুইসাইড ভেস্ট’ (আত্মঘাতী বন্ধনী) পরে অবস্থান করছেন।
রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সুমাইয়াকে আত্মসমর্পণের জন্য প্রথম থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা মাইকে আহ্বান জানিয়ে আসছিল। তিনি সাড়া দিচ্ছিলেন না। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা পর সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। এর আগে ওই বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় সুমাইয়া বেগমের ছয় বছরের ছেলে জুবায়ের এবং দেড় মাসের শিশুকন্যাকে আফিয়া।
এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন জঙ্গি বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরা হলেন, গৃহকর্তা সাজ্জাদ হোসেন (৫০), তার স্ত্রী বেলি বেগম (৪৮), মেয়ে কারিমা খাতুন (১৭), ছেলে সোয়াইব হোসেন (২৪) ও আল-আমীন (২৬)। মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন, গোদাগাড়ী ফায়ার স্টেশনের কর্মী আব্দুল মতিন। সকাল পৌনে ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতানে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় গোদাগাড়ী মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক উৎপল (৩৫) ও পুলিশ কনস্টেবল তাজুল ইসলাম (৪০) আহত হয়েছেন। তারা বর্তমানে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আজম তৌহিদ জানান, সাজ্জাদ হোসেন ফেরি করে এলাকায় কাপড় বিক্রি করতেন। ছেলেদের নিয়ে মাঝে মধ্যে কৃষিকাজও করতেন তিনি। মাস দুয়েক আগে মাঠের মধ্যে টিনের একতলা ওই বাড়িটি তৈরি করে পরিবার নিয়ে ওঠেন তিনি। এর আগে পদ্মার চরে তাদের বাড়ি ছিল। ভাঙন কবলে সেখান থেকে চলে আসেন।
তিনি আরো বলেন, সাজ্জাদ হোসেনের জামাতা জহুরুল হক। তিনি পুলিশের তালিকাভুক্ত জঙ্গি। সম্প্রতি গ্রেফতার হয়ে কাশিমপুর কারাগারে বন্দি আছেন। এ পরিবারের সদস্যরা অন্যদের সঙ্গে তেমন চলাফেরা করতো না।