বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নাইকো দুর্নীতি মামলা নিয়ে জারি করা রুল খারিজ করে দেয়া হাইকোর্টের আদেশের স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়িছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
একইসঙ্গে এই সময়ের মধ্যে মওদুদকে নিয়মিত (লিভ টু) আপিল করতে বলা হয়েছে।
মওদুদের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার মামলার কার্যক্রম আরও এক সপ্তাহ স্থগিত করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে মওদুদ আহমদ নিজেই শুনানি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
এর আগে ১২ এপ্রিল বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মওদুদের মামলার স্থগিতাদেশ বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করে দেন। এর ফলে ওই মামলা বিচারিক আদালতে চলতে বাধা কেটেছে বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে পরে আপিল করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন ১৩ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি রায় স্থগিত করে ৭ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।
এর আগে গত ১ ডিসেম্বর মওদুদের নাইকো মামলার কার্যক্রম ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। তার করা এক ফৌজদারি রিভিশন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি শেখ আব্দুল আউয়াল ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদক গত ৭ ডিসেম্বর লিভ টু আপিল করলে আপিল বিভাগ ১৯ জানুয়ারির মধ্যে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। গত ৪ জানুয়ারি বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল শুনানিতে বিব্রতবোধ করেন।
পরে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা রুলটি শুনানির জন্য বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে পাঠান। হাইকোর্টের সেই বেঞ্চ গত ১২ এপ্রিল রুলটি খারিজ করে দেন।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন।
পরের বছর ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। যেখানে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।